চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। রোববার বিকেলে দুই ছাত্রলীগ কর্মীর মধ্যে শাটলে বসা নিয়ে হাতাহাতির ঘটনার জেরে রাত ১১টার দিকে শাহজালাল হল ও সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে বিবাদমান দুটি পক্ষ সিক্সটি নাইন ও বিজয় গ্রুপের কর্মীরা অবস্থান নেয়। এ সময় রামদা ও লাঠি হাতে এক পক্ষকে সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের ও বিজয় গ্রুপের কর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৫টার ট্রেনে বিজয় গ্রুপের কর্মী ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মো. বখতিয়ারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে সিক্সটি নাইনের এক কর্মী। এ নিয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এর জের ধরে রাতে দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দিলে ইটের আঘাতে সিক্সটি নাইনের দেলোয়ার নামে এক কর্মী আহত হন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
এর আগে সন্ধ্যায় সিএফসি গ্রুপের কর্মী শহিদুল ইসলামকে মোবাইল চুরির অভিযোগে বিজয় পক্ষের কর্মীরা মারধর করেন। আহত শহিদুল শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায়ও দুই পক্ষে উত্তেজনা বজায় ছিল। তবে কোনো সংঘর্ষ বা ধাওয়া পাল্টার ঘটনা ঘটেনি।
মোবাইল চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে শহিদুল ইসলাম বলেন, চবি ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে মিটিং মিছিলে যাওয়ায় তাকে মারধর করা হয়। কমিটির আগে তিনি বিজয় গ্রুপের কর্মী ছিলেন বলেও দাবি করেন। তবে এখন তিনি সিএফসি গ্রুপের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।
চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, কর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে।
তবে বিজয় গ্রুপের ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, বিকেলের ঘটনার জেরে রাতের ঘটনা ঘটছে কি না তা আমার জানা নেই। তবে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা বিকেলে আমাদের কর্মীকে আহত করেছে। আগস্ট মাসে এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
অপরদিকে ঘণ্টাব্যাপী ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করলেও ঘটনাস্থলে আসেননি প্রক্টরিয়াল বডির কোনো সদস্য। ফোনেও পাওয়া যায়নি তাদের।
যদিও রাত ১২টার দিকে মুঠোফোনে সহকারী প্রক্টর রিফাত রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে স্বাভাবিক রাখতে কোনরূপ বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবে না। সংঘর্ষে সম্পৃক্ত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। পাশাপাশি এর মদদদাতাকেও খুঁজে বের করা হবে।
হাটহাজারী মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা খবর পেয়ে দুই হলের সামনে অবস্থান নিই। কোনো সংঘর্ষ হয়নি। উভয়পক্ষ আমাদের উপস্থিতিতে নিজ নিজ হলে চলে যায়। বর্তমানে পরিবেশ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে একজন আহত হওয়ার খবর শুনেছি।