চাঁদা বৃদ্ধির পরও ২১৬ কোটি টাকা বার্ষিক ঘাটতি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে শিক্ষকদের চাঁদার হার মোট ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করার পরও বার্ষিক ২১৬ কোটিরও বেশি টাকা ঘাটতি থাকবে। এই ঘাটতি পূরণ করতে আবারও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ঘুরতে হবে। রোববার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অবসর-সুবিধা বোর্ডের সদস্য-সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, চাঁদার হার বিদ্যমান ৪ থেকে ৬ শতাংশ করার পরও প্রতিবছর দুশো ষোলো কোটি টাকার বেশি ঘাটতি থাকবে। যা সরকারের কাছ থেকে চেয়ে চিন্তে নিতে হবে।

তিনি বলেন, অবসরে প্রতিমাসে ৪ শতাংশ হারে চাঁদা বাবদ জমা হয় ৩৫ কোটি টাকা। আরও দুই শতাংশ বেড়ে এই চাঁদা ছয় শতাংশ হলে প্রতিমাসে জমার পরিমাণ হবে ৫২ কোটি টাকা। কিন্তু প্রতিমাসে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধ করতে দরকার হবে ৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ চাঁদার পরিমাণ বাড়ানোর পরও প্রতিমাসে ঘাটতি ১৮ কোটি টাকা। যা বছরে ২১৬ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, কল্যাণ ট্রাস্ট ফান্ডে এখন প্রতিমাসে ২ শতাংশ হারে চাঁদা বাবদ জমা হয় ১৭ কোটি টাকা। আরও ২ শতাংশ বেড়ে এই চাঁদা চার শতাংশ হলে প্রতিমাসে জমার পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৪ কোটি টাকা। তবে বর্তমানে প্রতিমাসে কল্যাণ ফান্ডে শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধ করতে প্রয়োজন হয় ৩৫ কোটি টাকা।

বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শতকরা ৬ শতাংশ চাঁদা কেটে নেয়া হয়। এর মধ্যে ৪ শতাংশ চাঁদা কাটা হয় অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য । আর ২ শতাংশ  কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য। চলতি এপ্রিল মাস থেকে চাঁদার হার ৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করে কেটে রাখার আদেশ জারি হয়েছে। বাড়তি ৪ শতাংশের ২ শতাংশ যাবে অবসর সুবিধা বোর্ডের ফান্ডে। আর বাকি ২ শতাংশ কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে। অর্থাৎ এখন অবসর সুবিধা বোর্ডের চাঁদার অংশ হবে ৬ শতাংশ। আর কল্যাণ ট্রাস্টের ৪ শতাংশ।

অর্থ সংকট ও অব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে গত কয়েক বছর যাবত অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকা পেতে বছরের পর অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দীর্ঘ অপেক্ষা এবং দেন-দরবার করার পর গত দুই বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বিপুল অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর আবেদনকারীদের একটা বড় অংশকে টাকা দেয়া সম্ভব হয়েছে।

চাঁদার হার বাড়ানোর পেছনে সরকারের যুক্তি, শিক্ষকদের চাঁদার হার বাড়ালে অবসরে যাওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে এককালীন অবসর সুবিধার টাকা পেয়ে যাবেন। আর চাঁদার হার কম অর্থাৎ ৬ শতাংশ থাকলে টাকা পেতে অপেক্ষায় থাকতে হয়। অবসর সুবিধার টাকা পেতে তো পাঁচ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। একজন শিক্ষক চাকরিকালীন যত টাকা অবসর ফান্ডের জন্য চাঁদা দেন তার চাইতে ১৪ গুণ পর্যন্ত বেশি টাকা পান অবসরে যাওয়ার পর।

চাঁদার হার বাড়ানোর আদেশ জারির বিরোধীতা করছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, চাঁদার হার বাড়লেও অবসর সুবিধার টাকা তো আগের নিয়মেই দেয়া হবে। টাকাতো বাড়বে না। তাহলে বর্ধিত চাঁদা কেন দেবো? 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024631023406982