চাকরি স্কুলে হলেও শিক্ষা অফিসে কাজ করেন শিক্ষক

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি |

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পশ্চিম ধানখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আলী আহমেদ প্রায় এক মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। স্কুলে সহকারী শিক্ষকের পদে চাকরি পেলেও তিনি শিক্ষা অফিসে কাজ করছেন কম্পিউটার অপারেটরের। তাই, স্কুলে ১২৯ জন শিক্ষার্থীকে দুই শিফটে পাঠদান করাতে দুইজন শিক্ষককে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রায়ই শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যান দাপ্তরিক কাজে। এ সময় একজন শিক্ষকের উপর দায়িত্ব পড়ে প্রাক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদানের। অথচ স্কুলে শিক্ষকের পদ পাঁচটি।

গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে স্কুলটিতে প্রাক প্রাথমিকে ১৪ জন, প্রথম শ্রেণিতে ১৬ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৫ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১৭ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৯ জন ও পঞ্চম শ্রেণিতে ২৯ জন শিক্ষার্থীকে উপস্থিত দেখা যায়। প্রধান শিক্ষক সুফিয়া বেগম ও সহকারী শিক্ষক হুমায়ন কবিরকে তাঁদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। প্রতি শিফটে তিনটি শ্রেণির ক্লাস হলেও শিক্ষক মাত্র দুই জন। শিক্ষক না থাকায় একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অলস সময় কাটাতে হয়।
 
অভিভাবকদের অভিযোগ, কলাপাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আল আমিন এ বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি। স্কুল থেকে একজন শিক্ষককে ডেপুটেশনে নিয়ে শিক্ষা অফিসে কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করানো হচ্ছে তাঁদের সুবিধার জন্য। তাই, শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে পাঠদান থেকে। প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের গড় হাজিরা শতাধিক হলেও উপরে হলেও শুধু শিক্ষক সংকটের কারণে শ্রেণিকক্ষে অলস সময় কাটাতে হচ্ছে তাদের।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হুমায়ূন কবির দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষক আলী আহমেদকে ডেপুটেশনে শিক্ষা অফিসে নেয়ার পর অন্য এক শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে পদায়ন করা হয়। কিন্তু তিনি তিন-চারদিন ক্লাস করার পরই অন্য স্কুলে চলে যান। তাই, দুই শিক্ষককেই ১২৯ শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে হচ্ছে।

একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করেন, শিক্ষক আলী আহমেদ প্রতি শনিবার স্কুলে এসে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান। শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা তাঁর পক্ষে থাকায় পাঠদান না করেও নিয়মিত বেতন তুলতে পারছেন। 

এ বিষয়ে শিক্ষক আলী আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তিনি এখন শিক্ষা অফিসে কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করছেন স্যারদের সুবিধার জন্য। তাই, বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস করতে পারছেন না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুফিয়া বেগম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়ে জরুরিভিত্তিতে শিক্ষক পদায়ন দরকার। কেননা আমাকে যখন বিদ্যালয়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন অফিসে ও সভায় যোগদান করতে হয় তখন একজন শিক্ষককে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির সকল ক্লাস নিতে হয়।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আল আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অফিসের কাজের জন্য শিক্ষক আলী আহমেদকে শিক্ষা অফিসে কম্পিউটার অপারেটরের জন্য ডেপুটেশনে আনা হয়েছে। শিক্ষা অফিসে এখন জনবল সংকট। তবে, ওই স্কুলে খুব শিগগিরই শিক্ষক পদায়ন করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030460357666016