চাকরিজীবীদের আবাসন সুবিধা ৪০ শতাংশে নেয়ার উদ্যোগ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসনকে আগামী বাজেটে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ৮ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী এ সুবিধা পাচ্ছেন। আসন্ন বাজেটে আবাসন সুবিধা ৪০ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ থাকছে। এজন্য আবাসনসহ ৫২টি প্রকল্পের জন্য নতুন বাজেটে ৭ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি এ বরাদ্দ চেয়ে অর্থ সচিবকে প্রস্তাব পাঠিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। বুধবার (১৫ মে) দৈনিক যুগান্তরের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এতথ্য জানা যায়।  প্রতিবেদনটি  লিখেছেন মিজান চৌধুরী।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদুল খন্দকার বলেন, সরকারের উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ডকে অধিক গতিশীল করতে ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, রূপকল্প ২০২১ ও এসডিজির লক্ষ্যকে সামনে রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে স্বল্প ও মধ্য আয়ের লোকজনের জন্য সাশ্রয়ীমূল্যে ফ্ল্যাট নির্মাণ, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আবাসন সুবিধা বাড়ানোসহ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হলেও পুরো অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বাজেটের আগে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় তাদের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। বর্তমান গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৫৩টি প্রকল্প চলমান আছে। এসব প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখতে আগামী বাজেটে চাওয়া হয়েছে ৭ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। এছাড়া সম্ভাব্য অনুমোদনযোগ্য কয়েকটি প্রকল্পের জন্য এর বাইরে আরও ৪৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার সুপারিশ করেছে। 

সবমিলে ৭ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব পাওয়া গেছে। তবে অর্থ বিভাগ থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রাথমিক ব্যয়ের সিলিং নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। তাদের দেয়া প্রস্তাবটি পুনরায় বিবেচনা করা হচ্ছে। এদিকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আগামী বাজেটে যেসব প্রকল্পের অনুকূলে অর্থ চাওয়া হয়েছে অধিকাংশতেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এ মুহূর্তে সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সমস্যা সমাধান করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি অনুশাসন রয়েছে এ ব্যাপারে। কিন্তু অর্থ বিভাগ থেকে ব্যয়ের যে সিলিং নির্ধারণ করেছে এটি অপ্রতুল। এ অর্থ দিয়ে মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করা সম্ভব হবে না।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা সমাধানের অনুশাসন দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে ২১টি প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৫১০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। তবে আগামী অর্থবছরে আবাসন সংক্রান্ত ১৭টি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন ১ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। এ অর্থ চাওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংক ঋণের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। ১০ শতাংশ সুদে এ ঋণ দিচ্ছে। তবে সুদের ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি আকারে দিচ্ছে। অনেকে ব্যাংক ঋণ নিয়েই আবাসন সমস্যার সমাধান করছেন। তবে এখনও বিরাট একটি অংশ আবাসন সুবিধার বাইরে রয়েছে।

কুড়িল পূর্বাচল লিংক রোডের পাশে (কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত) ১০০ ফুট চওড়া খাল খননের অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আসন্ন বাজেটে এ প্রকল্পকে গুরুত্ব দিচ্ছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এজন্য অর্থ বিভাগের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। আগামী বাজেটে চট্টগ্রাম উন্নয়নে কয়েকটি প্রকল্পকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে এ মন্ত্রণালয়। 

এর মধ্যে চটগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুর ঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ, শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ এবং শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনর্খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন শীর্ষক চারটি বড় প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়। এসব প্রকল্পের জন্য আগামী বাজেটে ২ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। 

ঢাকার তীরবর্তী তুরাগ নদীর পাশে বন্যা প্রবাহ এলাকা জলাশয় সংরক্ষণ ও কমপ্যাক্ট উটনশিপ উন্নয়ন প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। এ প্রকল্পটি শিগগির অনুমোদন দেয়া হবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে আরও চারটি প্রকল্প। এগুলো হচ্ছে- ঢাকার মিরপুর হাউজিং এস্টেট বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ৯ হাজার ৪৭৭টি ফ্ল্যাট নির্মাণ, মিরপুরের এইচবিআরআইয়ের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় ছিন্নমূল বস্তিবাসীর জন্য ১ হাজার ৫৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ, ঢাকার বেইলি ড্যাম্প অফিসার্স কোয়ার্টার ক্যাম্পাসে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ ও রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে বসবাসরত অবাঙালিদের বসিলা পুনর্বাসনের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প। এর বাইরে আবাসিক খাতে আরও ১৩টি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

উল্লিখিত এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আগামী বাজেটে ৪৮১ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ঢাকার তীরবর্তী তুরাগ নদীর পাশে বন্যা প্রবাহ এলাকার জলাশয় সংরক্ষণ ও কমপ্যাক্ট উটনশিপ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরুর জন্য প্রয়োজন হবে ৩০০ কোটি টাকা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030620098114014