চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মেডিকেল অফিসার পদে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার সকাল পৌনে ৯টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। ধাপে ধাপে ৮ জুলাই পর্যন্ত এ পরীক্ষা চলবে। এদিকে আন্দোলনকারীরা লিখিত পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে তা বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অভিযোগ, ভর্তি পরীক্ষায় নজিরবিহীন অনিয়ম করা হয়েছে। উপাচার্য, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ কয়েকজন নিজেদের স্বজনদের নিয়োগ দিতে ফল টেম্পারিং করেছেন। পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এসব ঘটনার প্রমাণাদিও উপস্থাপন করা হয়। এর পরও পরীক্ষা বাতিল করে ফের নেওয়ার দাবি আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তারা জানান, বিষয়টি নিয়ে গত রোববার উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তারা। পুলিশ ও আনসার সদস্যরা তাদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে দিনভর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা চলে। এরই মধ্যে রোববার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লিখিত পরীক্ষায় অনিয়মের কিছু চিত্র তুলে ধরে তা বাতিলের দাবি করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতেও রিট করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা মৌখিক পরীক্ষা প্রতিহত করার চেষ্টা করলেও পুলিশের কড়া অবস্থানের কারণে তা সফল হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় শতাধিক চিকিৎসক জড়ো হয়ে আমরণ অনশনের ডাক দেন। একপর্যায়ে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলেও পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ূয়া বলেন, ফল প্রকাশের পরের দিন একজন বেশকিছু অভিযোগ করেন। তা যাছাই-বাছাই করে কোনো গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যায়নি। এর পরও তারা পরীক্ষা বাতিলের দাবি করে আসছে। কিন্তু পরীক্ষা বাতিলের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তিনি বলেন, কারও কাছ থেকে উস্কানি পেয়ে অথবা হয়তো নিজেরাই কেউ কেউ এভাবে আন্দোলন করছে। সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে। আদালতের রিট বিষয়ে উপাচার্য বলেন, পরীক্ষায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। এরপর আদালত থেকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা এলে তা মেনে নেওয়া হবে।
গত ২০ মার্চ বিএসএমএমইউতে মেডিকেল অফিসার ১৮০ এবং ডেন্টাল চিকিৎসকের ২০ পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় আট হাজার ৫৫৭ চিকিৎসক অংশ নেন। এরপর ১২ মে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশের পরপরই অনিয়মের অভিযোগ তুলে তা বাতিলের দাবিতে মিছিল বের করেন শতাধিক চিকিৎসক। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় ফল বাতিলের দাবি জানিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে আসছেন তারা।