চাকসু নির্বাচন: প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব দেখছে ছাত্রসংগঠনগুলো

চবি প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচন ২৮ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ছাত্রসংগঠনগুলোর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবেই প্রায় তিন দশক ধরে চাকসু নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, চাকসু নির্বাচন না হওয়ার কারণ ছাত্রসংগঠনগুলোর হানাহানি ও দলাদলি। এ অবস্থায় নির্বাচন হলে পরিস্থিতি আরো বেগতিক হবে।

চাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতিবছর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছরে চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ছয়বার। প্রায় তিন দশক ধরে ছাত্রসংসদ অকার্যকর থাকায় চাকসু ভবন এখন শিক্ষার্থীদের কাছে শুধু ক্যান্টিন হিসেবেই পরিচিত। নির্বাচন না হওয়ায় সিনেটে নেই ছাত্রদের কোনো প্রতিনিধিও। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া আদায়ে চাকসু নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে মনে করছে ছাত্রসংগঠনগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন বলেন, ‘চাকসু নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ হচ্ছে। এ অন্যায় অবসানে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্বাচনের জন্য আলটিমেটাম দিয়েছি। কোনো অগ্রগতি না হলে অন্যান্য ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মীর্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত চাকসু নির্বাচন নিয়ে ভাবুক, ছাত্রসংগঠনগুলোকে ডাকুক এবং নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করুক। আর সহিংসতার কথা বলে চাকসু নির্বাচন আটকে না রাখাই ভালো। এতে করে সহিংসতা আরো দিন দিন বাড়ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে অরাজকতা চালাচ্ছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্লাস করা দূরের কথা, পরীক্ষা দিতে গেলেও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হচ্ছে। এই পরিস্থিতি অবসানে চাকসু নির্বাচন দরকার।’

চবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ধীষণ চাকমা বলেন, ‘নির্বাচন না হওয়ায় গণতন্ত্রের পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। সিনেটে ছাত্ররা প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। এ কারণে ছাত্রদের ন্যায্য দাবি প্রশাসনের কাছে যাচ্ছে না। আর প্রশাসনের ইচ্ছার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে চাকসু নির্বাচন বন্ধ রয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আবিদ খন্দকার বলেন, ‘অনেক দিন ধরে চাকসু নির্বাচন আমাদের দাবি। নির্বাচন না থাকায় ক্যাম্পাসে কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচনের জন্য শতভাগ আগ্রহী। শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যকার সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আমরা চাকসু নির্বাচন দিতে প্রস্তুত আছি।’

উল্লেখ্য, সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। ওই নির্বাচনে ভিপি হন তৎকালীন ছাত্রদল নেতা নাজিম উদ্দিন। জিএস হন আজিম উদ্দিন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028970241546631