করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে চীনের এক নাগরিককে ভর্তি করা হয়েছে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত হতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জ্বর, সর্দি ও বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক হুমায়ুন কবির এ তথ্য জানান।
এদিকে, ঢাকায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, চীন-সিঙ্গাপুরফেরত যাত্রী মানেই করোনাভাইরাসের সন্দেহজনক রোগী নয়। চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে প্রতিদিন অনেক যাত্রী বাংলাদেশে আসছেন। চীনের সব প্রদেশে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটেনি। চীন বা সিঙ্গাপুরের করোনাভাইরাস উপদ্রুত অঞ্চল থেকে এখন আর কোনো যাত্রীর বাংলাদেশে আসার সুযোগ নেই। এদিকে গতকাল পর্যন্ত দেশে সন্দেহজনক মোট ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও কারো মধ্যেই করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক হুমায়ুন কবির জানান, চীনের ওই নাগরিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। বর্তমানে তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের করোনা ইউনিটে রাখা হয়েছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি চীন থেকে বাংলাদেশে আসেন ওই নাগরিক। তিনি নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে চায়নিজ একটি কম্পানিতে কর্মরত।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রোস্তম আলী জানান, নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে চীনের নাগরিককে। আইইডিসিআরের লোকজন এসে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাবেন।
গতকাল নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ডা. রোস্তম আলী বলেন, ‘সতর্কতার অংশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশে আগত চীন ও সিঙ্গাপুরফেরত যাত্রীদের মধ্যে যাঁরা জ্বর-হাঁচি-কাশিতে ভুগছেন তাদের আইসোলেশন করে চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নমুনা পরীক্ষা করছি। বাকিদের যার যার বাসায় স্বেচ্ছা-কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
আইইডিসিআরের ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, চীনের উহানফেরত ৩১২ জনের সবাই সুস্থ অবস্থায় তাঁদের বাড়ি ঘরে ফিরে গেছেন। তবে তাঁদের কোয়ারেন্টাইন-পরবর্তী আরো ১০ দিন সীমিত চলাচল এবং নিজেদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অবহিত করতে আইইডিসিআরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ব্রিফিং আরও জানানো হয়েছে, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো তথ্য অনুসারে বাংলাদেশের মোট পাঁচজন নাগরিক সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে একজন আইসিইউয়ে আছেন। কোয়ারান্টাইনে আছেন বাংলাদেশের আরও পাঁচ নাগরিক। বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের দূতাবাস থেকেও সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।
চীন থেকে এসেই বরগুনার হাসপাতালে : আমাদের বরগুনা প্রতিনিধি জানান, গত শনিবার চীন থেকে আসা এক শিক্ষার্থীকে গতকাল বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্বজনদের সহযোগিতায় তাঁকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ওই শিক্ষার্থী জ্বরে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করেছেন বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন শাহীন খান।