ছাত্র-শিক্ষকদের ধান্দাবান্ধব রাজনীতির প্যাচে ডাকসু

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী কাল বলছিলেন, তার এক আত্মীয় গতকাল তাকে ফোন দিয়ে বলেছে আত্মীয়ের ছেলেটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেয়ার জন্য। সাদ যখন বললো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোনো শর্টকাট পথ নেই, তখন তিনি বললেন, তুমি যেইভাবে পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হয়েছ ঐভাবে ভর্তি করিয়ে দাও। ডাকসুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আরিফ ইবনে আলীও বললো, সেও ফোন পেয়েছে ছাত্র ভর্তির তদবির পেয়ে। ওনারা বলেছেন যত টাকা লাগে তত টাকা দিবেন। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, আসলেই কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়া যায়। এই কথা অশিক্ষিত মূর্খ ছাড়া আর কেউ বলবেও না, বিশ্বাসও করবে না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু দলবাজ শিক্ষক ও বাম-ডান ছাত্রসংগঠন বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রকম ইমেজই সৃষ্টি করছে। এই ছাত্র-শিক্ষকদের অনেকেই বিদেশী এনজিও ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধাভোগী। একটু বুদ্ধি খাটালেই তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে যাবে। আর এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে কিছু মিডিয়া। হুজুগে লিখে যাচ্ছে।এতে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেজের কত বড় ক্ষতি হচ্ছে, তা তারা ভাবছেন না। সবাই নিজস্ব স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত।

আসেন দেখি আসল ঘটনা কি। এই সাদ, আরিফ, তন্বী, রাকিব, তানভীর, নজরুল, শাকিল এরা সবাই আজ থেকে ৭/৮ বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই ভর্তি হয়েছেন। অনার্স/মাস্টার্সও সম্পন্ন করেছেন। এরপরও বলবেন তারা ভর্তি পরীক্ষা দেয়নি? ভর্তি পরীক্ষা দিয়েই তারা ভর্তি হয়েছে। আপনারা যারা বলছেন এরা বিনা পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে ইচ্ছে করলে এই ছেলে মেয়েরা তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করতে পারে। তখন আন্দোলন ছেড়ে কোর্টের বারান্দায় দৌঁড়াতে হবে।

হুম, আপনারা প্রশ্ন তুলতে পারেন ডাকসু নির্বাচনের আগে তারা যে সান্ধ্যকালীন ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স কোর্স ভর্তি হয়েছে সেটা নিয়ে। কিন্তু সেখানেও তারা নিয়ম মেনেই ভর্তি হয়েছেন। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের নিয়ম অনুযায়ী অনুষদ কর্তৃক পরিচালিত কোনো নিজস্ব কোর্সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা নিয়মিত শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র “মৌখিক পরীক্ষার” মাধ্যমে সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি হতে পারে। “গত বছরের ১৮ এপ্রিল ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সভায় এ নিয়ম প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ১৬ জুলাই থেকে তা কার্যকর হয়। তখন ক্যাম্পাসে ডাকসুর আওয়াজ শুরু হয়নি।” শুধু এই ৭ জন নয়, সর্বমোট ৬০ জন শিক্ষার্থী ওই বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ডান- বাম ছাত্র নেতারাও আছেন। তারা ভোটে পাস করেননি এই অপরাধ কি এই সাত জনের? তাদের নামতো কেউ বলছে না। এই সাত জনের নামের মধ্যে কি খুব বেশি মধু আছে নাকি অপরাধ ওরা ছাত্রলীগ করে?

ডাকসুর ইতিহাস দেখেন। চাকসুর মান্না, জগন্নাথের আখতার ঢাকা মেডিকেলের মোস্তাক, এমনকি ঢাবির আমান- খোকনও একই প্রক্রিয়ায় ভর্তি হয়ে ডাকসুতে নির্বাচিত হয়েছেন। এই সাতজনের পদ বাতিল করতে চাইলে এর আগে ডাকসুর গত ৪০ বছরের নির্বাচিত অধিকাংশের পদ বাতিল করার আওয়াজ তোলেন। আপনাদের ধান্দাবান্ধব অসুস্থ রাজনীতির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কলংকিত করা উচিত না।

আশরাফুল আলম খোকন : প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির - dainik shiksha অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041828155517578