জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নে মোজাদ্দেদিয়া আশরাফুল উলুম হাফিজিয়া নুরানি মাদরাসার ১২ বছর বয়সের এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে একই মাদরাসার শিক্ষক মো. আলা উদ্দিনকে (২৭) আটক করে পুলিশে দিয়েছে গ্রামবাসী।
মাদরাসাটির একটি কক্ষে গত শুক্রবার সকালে বলাৎকারের ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে তাকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষক জেলার ইসলামপুর উপজেলার পঁচাবহলা মধ্যপাড়া গ্রামের মো. তারা মণ্ডলের ছেলে। শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাতেই সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
যৌন নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবার অভিযোগ, তাদের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের ডেঙ্গারগড় গ্রামে। তার ১২ বছর বয়সের ছেলেটি ওই গ্রামের মোজাদ্দেদিয়া আশরাফুল উলুম হাফিজিয়া নুরানি মাদরাসার কোরআনে হাফেজ পড়াশোনা করে প্রায় পাঁচ বছর ধরে। সে ইতিমধ্যে কোরআনের ২৫ পারা পর্যন্ত সুরা মুখস্থ করেছে।
জেলার ইসলামপুর উপজেলার পচাবহলা গ্রামের হাফেজ মো. আলা উদ্দিন চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই মাদরাসায় নতুন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন। গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তার ছেলে বাড়ি থেকে টিফিন ক্যারিয়ারে করে শিক্ষক আলা উদ্দিনের জন্য সকালের খাবার নিয়ে মাদরাসায় যায়।
এ সময় শিক্ষক আলা উদ্দিন মাদরাসার তিন নম্বর কক্ষে বসে খাবার খান। খাওয়ার পর টিফিন ক্যারিয়ারের বাটিগুলো ওই ছাত্রকে ধুয়ে আনতে বলেন। সে বাটিগুলো ধুয়ে পুনরায় শিক্ষকের কক্ষে যায়। শিক্ষক তাকে দিয়ে কক্ষের জানালা বন্ধ করায়। এরপর ওই শিক্ষক প্রথমে শিশুটির সাথে অশ্লীল আচরণ করেন এবং পরে জোরপূর্বক তাকে বলাৎকার করেন। শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে ওই শিক্ষক বলাৎকারের ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
শিশুটি বাড়িতে ফিরে গেলে তার মন খারাপ দেখে তার বাবা কি হয়েছে বলে জানতে চাইলে ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ে শিশুটি তার বাবার কাছে ঘটনা খুলে বলে। এ ঘটনা প্রতিবেশীরা জানতে পেরে শনিবার বিকেলে শিক্ষক আলা উদ্দিনকে ওই মাদরাসায় আটক করে সদর থানায় খবর দেন। পরে সদর থানা পুলিশ শনিবার রাতে শিক্ষক আলা উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় যৌন নির্যাতনের শিকার ওই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে শিক্ষক আলা উদ্দিনকে আসামি করে শনিবার রাতেই জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাদরাসাছাত্র এক শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগে একই মাদরাসার শিক্ষক আলা উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তাকে আসামি করে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আজ রবিবার সকালে তাকে জামালপুর আদালতে হাজির করা হবে। একই সাথে হাসপাতালে নিয়ে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হবে।’