বাংলাদেশ প্রকেৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয় গেটে এ ঘটনা ঘটে। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয় ঘেরাও করতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। তারা কাটাতারের বেড়া দিয়ে আন্দোলনকারীদের রুখে দেয়।
পরে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা সচিবালয়ের সামনের সড়কে বসে পড়েন। সেখানে আবরার হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন। এ হত্যাকাণ্ডে সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন তারা। সেই সঙ্গে আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের বিচার দাবি করেন। বুয়েট প্রশাসনকে ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।
প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।
এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১০ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।