ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতাই মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জরিপে নাম থাকা সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের পরিবেশ বিষয়ক উপ-সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জরিপের বরাত দিয়ে একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন কোনোভাবেই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় দাবি বলে করেন সোহাগ। তিনি বলেন, ‘এটি যদি সত্যিকারের ও সঠিক কোনো অনুসন্ধান হতো, তাহলে আমার নাম এই তালিকায় থাকতো না। বরং আরো অন্যান্য নাম থেকে থাকতো যারা প্রকৃতপক্ষে এসব কাজে জড়িত। এটা আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি।
কাদের নাম থাকতে পারত?- এমন প্রশ্নে সোহাগ বলেন, ‘আমি অনেকের পরিচয় জানি। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতা আছেন। তবে আমি কারো নাম বলতে পারব না।’
মাদকের ভয়াবহ বিস্তারের বিষয়টি তুলে ধরে গত বেশ কিছুদিন এ নিয়ে বড় ধরনের অভিযান শুরু করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের নানা আয়োজনেও তিনি সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ২৫শে জানুয়ারি গণভবনে ছাত্রলীগের এক আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরকে বলেন, ‘মাদকাসক্তি শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করে, ভবিষ্যত ধ্বংস করে দেয়। এটি মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। সুতরাং অকালে যেন কেউ মৃত্যুর মুখে ঝরে না পড়ে সেদিকে তোমরা অবশ্যই নজর দেবে। নেতা হিসেবে এটা তোমাদের দায়িত্ব।’
এর মধ্যে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতার নাম গণমাধ্যমে আসায় সংগঠনটি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।
এদের মধ্যে সোহাগ নিজেকে নিরপরাধ দাবি করে বলেন, ‘আমি জীবনেও সিগারেট খাইনি। আমি মাদক সেবন বা ব্যবসার সাথে কোনভাবে জড়িত নই। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তবে আমি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করব।’
সোহাগ বলেন, ‘প্রতিবেদন লেখার আগে একটু গভীরভাবে তদন্ত করাটা আমার প্রত্যাশা ছিল। ওই প্রতিবেদনে যাদের নাম এসেছে তাদের সাথে আমার পড়াশুনা ও রাজনীতির মধ্য দিয়ে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার মানে এই নয় যে তাদের কাজকর্মে আমারও সুম্পৃক্ততা আছে।’
সোহাগের বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, এটা তার ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। তবে তিনি ঢালাওভাবে কাউকে কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত করতে পারেন না।
আমরা ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত যে তালিকা বের হয়েছে তা বিরুদ্ধে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও বলেছেন এই জরিপটি ভুয়া। আমাদের কোনো নেতা মাদকের সঙ্গে জড়িত নয়। যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিব।
