দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছে। আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। দেশের ‘দ্বিতীয় পার্লামেন্ট’ খ্যাত ডাকসু নির্বাচনের আলোচনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন সারা দেশে। এর আগে ১৯৯১ সাল থেকে সাতবার নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা বিভিন্ন কারণে ভেস্তে গেছে। এবারের নির্বাচন নিয়ে নানা শঙ্কা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য পুরোদমে কাজ শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্র সংগঠনগুলোও কাজ করছে প্যানেল তৈরিতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৪ সালে। ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালের ৬ জুন। এরপর দীর্ঘ সাড়ে ২৮ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সব পর্যায়ে প্রতিনিধি নির্বাচন হলেও ছাত্ররা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পায়নি। ১৯৯০ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময় ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে শুধু প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু ২০১৮ সাল পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করেননি। সর্বশেষ নির্বাচনের এক বছর পর ১৯৯১ সালের ১২ জুন তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেও সহিংসতার ফলে তা ভেস্তে যায়। এভাবে ব্যর্থ হয় সাতবারের উদ্যোগ।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর ফের ডাকসু নির্বাচন নিয়ে স্বপ্নের সঞ্চার হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নিজ নিজ হলের কেন্দ্রে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট প্রদান করবেন। যদিও শুরু থেকেই হলে ভোটকেন্দ্র করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছিল সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো। হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র করা এবং ক্যাম্পাস ও ১৮টি আবাসিক হলে সহাবস্থানের দাবিতে এখনও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন তারা।
নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, জাতির প্রত্যাশা রয়েছে। আর এ নির্বাচনের জন্য আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা নিয়েই আমরা এগোচ্ছি এবং কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রেখেছি। আশা করছি, সবার সদয় সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারব। কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের নিরাপদ ক্যাম্পাস ও সহাবস্থানের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রভোস্ট কমিটির সভায় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে ইতিমধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রয়েছে। সবাই একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।
সূত্র: দৈনিক যুগান্তর