কেশবপুরে সাগরদাঁড়ি আবু শারাফ সাদেক কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটেরা সোমবার রাতে কপোতাক্ষ নদের ওপর বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে দিয়েছে। ফলে নদের ওপারের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী মঙ্গলবার সাগরদাঁড়ি স্কুল ও কলেজে যেতে পারেনি। এ নিয়ে নদের দু'পাড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন জয়নগর, ধানদিয়া, সেনেরগাতি ও সারসা গ্রামের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী কপোতাক্ষ নদের ওপরের বাঁশের সাঁকো পার হয়ে কেশবপুরে প্রতিদিন সাগরদাঁড়ি মাইকেল মধুসূদন ইনস্টিটিউশন এবং কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি আবু শারাফ সাদেক কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। এ ছাড়া ওইসব গ্রামের বাসিন্দারা সাগরদাঁড়ি বাজারে পণ্য কেনাবেচা ও সওদা করে থাকে।
সাগরদাঁড়ি কলেজের একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্রী গণিত ও পরিসংখ্যান বিষয়ে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা দিয়ে সোমবার বিকেলে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় সাগরদাঁড়ি গ্রামের বখাটে আমিনুর, মিজানুর, তরিকুল, শহিদুল, আনিছুর, সোহান ও শেখপুরা গ্রামের কাজী বিপ্লব সাঁকোর ওপারে সারসা গ্রামের আব্দুস সোবহানের বাড়ির সামনে ওই দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে। এ সময় তাদের সঙ্গী ছাত্ররা প্রতিবাদ করায় তাদের মারধর করে বখাটেরা। এ ঘটনা জানতে পেরে সারসা এলাকার বাসিন্দারা ধাওয়া করলে বখাটেরা সাঁকো পার হয়ে পালিয়ে আসে। সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীদের চাচা ইবাদুল শেখ সাগরদাঁড়ি বাজারে এলে বখাটেরা তাকে মারধর করে। এ ঘটনায় কপোতাক্ষ নদের দু'পাড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার গভীর রাতে কপোতাক্ষ নদের ওপরের বাঁশের সাঁকোর মাঝ থেকে বখাটেরা ভেঙে দেয়। মঙ্গলবার ওপাড়ের শিক্ষার্থীরা সেতু ভাঙার কারণে স্কুল ও কলেজে আসতে পারেনি। এ ঘটনায় ইবাদুল শেখ পাটকেলঘাটা থানায় অভিযোগ করেছেন।
সাগরদাঁড়ি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) শ্যামল কুমার ঘোষ বলেন, বখাটেদের উত্ত্যক্তের শিকার দুই ছাত্রীর অভিভাবক ৭ বখাটের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সকালে নদীর ওপারের ৩০ শিক্ষার্থীকে অন্যপথে নৌকায় নদী পার করে মঙ্গলবার পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য কলেজে নিয়ে এসেছি। পরীক্ষার পর দু'পক্ষের অভিভাবকদের নিয়ে মীমাংসার জন্য বসার ব্যবস্থা করেছি।
সাতক্ষীরার ধানদিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাগরদাঁড়ি স্কুল ও কলেজে পড়তে গিয়ে আমার এলাকার ছেলেমেয়েদের বখাটেদের উত্ত্যক্তের শিকার হতে হয়। বিভিন্ন সময় অভিভাবকদেরও তুচ্ছ ঘটনায় তারা মারধর করে থাকে। এটা বন্ধ না হলে অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের ওপারে যাওয়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন।
কেশবপুরের ইউএনও মিজানুর রহমান বলেন, কেশবপুর থানার ওসিকে (তদন্ত) বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।