ছাত্রী যৌন হয়রানির দায়ে চাকরি হারাচ্ছেন দুই শিক্ষক

বগুড়া প্রতিনিধি : |

প্রাক্তন দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষক চাকরি হারাচ্ছেন। তারা হলেন,বাংলা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আবদুল মোত্তালিব।

যৌন হয়রানির অভিযোগে পর জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় তাদেরকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষ করতোয়ায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।এতে সভাপতিত্ব করেন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক।

তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগ। পর্ষদের সভায় তিনিও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও আবদুল মোত্তালিবের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ছাত্রীদের সঙ্গে তাদের আচরণ শিক্ষাসুলভ ছিল না।

তিনি আরো বলেন, তদন্ত কমিটি ওই দুই শিক্ষককে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের সভায় তা আমলে নিয়ে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করা হয়েছে। বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের কাছে তা লিখিতভাবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান তিনি।

শিক্ষক আবদুল মোত্তালিবের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বেসরকারি মেডিকেলে অধ্যয়নরত ওই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন এক ছাত্রী। এতে গত ২১ আগস্ট রাতে মেসেঞ্জারে অশ্লীল প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

পরে ওই ছাত্রীকে ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়। এছাড়া অশ্লীল ছবি বানিয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির পাশাপাশি ক্ষতি হবে বলেও শাসানো হয়। পরে ফোনালাপের ওই অডিও এবং অশ্লীল প্রস্তাবের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়।

এদিকে শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে আরেক প্রাক্তন ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন। তার অভিযোগ, গত ২০ জানুয়ারি আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গেলে ওই শিক্ষকের সঙ্গে দেখা হয়। সন্ধ্যায় নিজের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তাকে দেখে সালামও দেন।

এসময় তিনি বাসায় নেওয়ার জন্য জোরাজুরি করেন। এতে রাজি না হওয়ায় জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেন। এছাড়া বাসায় নিতে টানাহেঁচড়াও শুরু করেন। পরে তিনি চিৎকার দিলে ওই শিক্ষক ছেড়ে দেন। এ বিষয়ে গত ২২ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী।

এরপর উল্টো অভিযোগ প্রত্যাহারের চাপ শুরু হয়। নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান। বিষয়টি মীমাংসা করতেও তাকে বাধ্য করা হয়। বিষয়টি গণমাধ্যমে জানতে পেরে তদন্তের জন্য মাউশি মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
পরে মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক কামাল হোসেনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে ওই অভিযোগের সত্যতা পায়। এছাড়া জেলা প্রশাসক আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028250217437744