রাজধানীর বাউনিয়া বাঁধ এলাকার একটি মাদরাসা থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। মাদরাসাকর্তৃপক্ষের দাবি, তাকে জিনে নিয়ে গেছে। বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মেয়েটির বাবা মো. শরীফ উল্লা ও মা শিল্পী আক্তার।
মেয়েটির নাম সাজমিন আক্তার। বাড়ি মিরপুরের শাহ্ আলীবাগে। সে চার বছর ধরে বাউনিয়া বাঁধ জামিয়া ফোরকানিয়া তালিমিয়া মহিলা মাদরাসায় পড়াশোনা করছিল।
শরীফ উল্লা বলেন, গত ৮ আগস্ট ঈদুল আজহার ছুটিতে আমরা সাজমিনকে বাসায় নিয়ে যাই। এরপর ২৭ আগস্ট ছুটি শেষে আমি তাকে মাদরাসায় দিয়ে আসি। ৩১ আগস্ট বিকেলে মাদরাসা থেকে আমাকে ফোন করে বলা হয়, আমার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন আমি মাদরাসায় যাই। গেটে গিয়ে দারোয়ানকে বলি মেয়েকে ডেকে দিতে। অনেকক্ষণ পর দারোয়ান ভেতর থেকে গেটে এসে জানান, আমার মেয়েকে নাকি সকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। এখনো (দুপুরে) ফেরেনি। তখন আমি হুজুর (দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক শিক্ষক) ও মাদরাসার আপাকে (শিক্ষিকা) ফোন করে আমার মেয়ের বিষয়ে জানতে চাই। তখন তারা আমাকে বিভিন্ন ধরনের কথা বলেন। একবার বলেছেন, তার বাবা এসেছে বলে দেখা করতে গেটে গিয়েছিল, আর ফেরেনি। আরেকবার বলেন, আমার মেয়ের ওপর নাকি জিন আছে, তাকে নাকি জিনে নিয়ে গেছে। আবার বলে, আমার মেয়ে নাকি অসুস্থ, অজ্ঞান হয়ে সিঁড়িতে পড়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, মেয়েকে খুঁজতে আমি মাদরাসার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে চাই। আমাকে তা দেখতে দেয়া হয়নি। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর আমি পল্লবী থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। জিডির তিনদিন পর পুলিশ মাদরাসায় গিয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে চায়। তখন পুলিশ দেখে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল।
তিনি আরও জানান, এরপর একটি প্রতারক চক্র পল্লবী থানায় ফোন করে নরসিংদীতে আমার মেয়েকে পাওয়া গেছে বলে জানায়। আমরা যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে ফোনে টাকা দাবি করে। তখন আমরা নিশ্চিত হই যে, এটা প্রতারক চক্র। এছাড়া কয়েকটি নম্বর থেকে ফোন করে আমার মেয়ে তাদের কাছে আছে বলে দাবি করে ১ লাখ টাকা করে চায়। কিন্তু পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে তারাও প্রতারণা করছে।
তিনি বলেন, আজ (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত আমার মেয়ের সন্ধান পাইনি। আমি জানি না, সে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে।