ঢাকার ধামরাইয়ে কালামপুর আমাতন নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় কয়েক বখাটে উত্ত্যক্ত করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। এ বিষয়ে গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতিকে লিখিত অভিযোগ দেয় উত্ত্যক্তের শিকার ছাত্রীরা।
এদিকে উত্ত্যক্তকারীদের প্রতিবাদ করেন এক ছাত্রীর চাচাতো ভাই ও মামা। প্রতিবাদ করায় বখাটেরা তাঁদের বেদম পিটিয়ে আহত করে। এ নিয়ে দুই দফায় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এদিকে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে বখাটেরা পাল্টা অভিযোগ দেয় থানায়। অভিযোগ পেয়ে পুলিশও অভিযুক্তদের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
উত্ত্যক্তের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, কালামপুর আমাতন নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রায় আটজন ছাত্রী নিজ গ্রাম সোমভাগ ইউনিয়নের দেপাশাই কারাবিল থেকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ছোট কালামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আবদুর রহমান, আলামিন, রাসেল, জুয়েলসহ কয়েক বখাটে তাদের প্রতি অশালীন অঙ্গভঙ্গি ও খারাপ মন্তব্য করে আসছিল। গত সোমবারও একইভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে ওই বখাটেরা। এর প্রতিবাদ করে এক ছাত্রীর ভাই শহিদুল ও মামা শাকিল। এতে বখাটেরা তাদের দুজনকে মারধর করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দুই দফা মারামারির ঘটনা ঘটে।
এদিকে প্রকৃত ঘটনা গোপন রেখে বখাটেদের একজন থানায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ধামরাই থানার এসআই রফিকুল ইসলাম লিটন অভিযুক্ত মাঠু মিয়া ও মিলনের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।
গত তিন দিনে বখাটেদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ আইনগত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় উত্ত্যক্তের শিকার ছাত্রীরা ও তাদের অভিভাবকরা হতাশায় ভুগছেন। অভিভাবক মাঠু মিয়া বলেন, ‘আমার ভাতিজিসহ কয়েক ছাত্রীকে যারা উত্ত্যক্ত করে আসছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো পুলিশ আমাদেরই খুঁজছে।’
আমাতন নেছা বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, সানোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ খান লাল্টু বলেন, ‘উত্ত্যক্তের বিষয়টি ছাত্রীরা আমাকে জানিয়েছে। আমিও থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করেছি।’ ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা গতকাল বলেন, ‘বখাটেরা প্রকৃত ঘটনা গোপন রেখে অভিযোগ দেয়। পরে প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরে বখাটেদের বিরুদ্ধে আজই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, ‘অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে দোষী প্রমাণিত হলে বখাটেদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ছোট কালামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মধ্যে কয়েকজন বখাটে মাদক কারবারের সঙ্গেও জড়িত রয়েছে বলে স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে।