মানিকগঞ্জের শিবালয়ের নয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ঈশিতা আক্তার আঞ্জুমান (১৩) নামের এক ছাত্রীকে তুচ্ছ ঘটনার জেরে বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এতে নিরুপায় হয়ে লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীকে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর মায়ের সাথে রাগ করে ঈশিতা স্কুল থেকে পালিয়ে সাভারের আমীনবাজারে এক আত্মীয়র বাড়ি যান। এ সময় বাড়ির লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারে স্কুলে সহপাঠিদের কাছে ঈশিতা একটি চিঠিতে লিখে যান 'আমি আত্মীয় বাসায় গেলাম। মাকে তোরা বলিস যে চিন্তা না করে'।
পরে বাড়িতে আসলে কয়েক দিন পর বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক মো. ঈসমাইল হোসেন মেয়েটি স্কুল থেকে বের করে দেন। এবং বলেন, তুমি কোন ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছিলে। তাই তোমার এ স্কুলে রাখা হবে না। কারণ তোমার জন্য স্কুলের সুনাম নষ্ট হবে।
ঈশিতার নানা সাইজুদ্দিন জানান, আমরা গরিব মানুষ। আমার নাতনীকে অনেক কষ্টে আমি আমার বাড়ি রেখে মানুষ করছি। এতো ছোট মেয়েকে মাস্টার সাবে কিভাবে এরকম অপবাদ দিতে পারে। এখন ঈসমাইল স্যার ওকে স্কুলে যেতে দিচ্ছে না। তাই আমরা আর কি করবো।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ঈসমাইলের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমি মেয়েটিকে স্কুলে আসা নিষেধ করে দিয়েছি। কারণ ওই মেয়েটি মায়ের সাথে কিছু কুচক্রিমহলের মাধ্যেমে বলা হচ্ছিল আমি নাকি ওকে নিয়ে পালিয়ে গেছিলাম।
উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কেন মেয়েটির স্কুলে আসা বন্ধ করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে এ রকম ৫-৬ জনের স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছি। এটা আমাদের স্কুলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান জানান, এ ব্যাপারে মেযেটির মা গত সোমবার আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি মধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। আর মেয়েটিকে কোনো মতেই স্কুলে আসা বন্ধ করা শিক্ষকের ঠিক হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম ফারুক জানান, আমি ইতোমধ্যে উভয় পক্ষকে চিঠি দিয়ে অফিসে আসার জন্য বলেছি। দেখি সব শুনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।