ছোট ভাইয়ের সনদে মাদরাসায় চাকরির অভিযোগ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি |

সৌদি প্রবাসী ছোট ভাই রফিকুল ইসলামের সনদ ব্যবহার করে মাদরাসায় চাকরি পেয়েছেন বড় ভাই নজরুল ইসলাম। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের বনগ্রাম ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগে এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রফিকুল ও নজরুল মধ্য বনগ্রামের বাসিন্দা।

এ ব্যাপারে এলাকাবাসী গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে এলাকার ৩২ জন গণ্যমান্য ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছেন।

অভিযোযে বলা হয়েছে, রফিকুল ইসলাম জেএসসি পাস। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে থেকে তিনি সৌদি আরবে আছেন। রফিকুলের ভাই নজরুল ইসলাম এসএসসি পাস করতে পারেননি। চলতি বছর আগস্ট মাসে বনগ্রাম ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ পদে নজরুল ছোট ভাই রফিকুলের সনদ দিয়ে ওই পদে চাকরির আবেদন করেন। ২৭ আগস্ট নিয়োগ পরীক্ষার দিন হাজিরা শিটে রফিকুলের নামে নজরুল স্বাক্ষর করে পরীক্ষায় অংশ নেন। মাদরাসা সুপার ইউনুস আলী ও মুকসুদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাহাদাত আলী মোল্লা টাকার বিনিময়ে ছোট ভাইয়ের সনদে বড় ভাই নজরুলকে নিয়োগ দিয়েছেন।

বনগ্রাম ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সাবেক দুই সভাপতি এনামুল হক ও নূরুল হক মাতুব্বর বলেন, মাদরাসার সুপার ও শিক্ষা কর্মকর্তা ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে মাদরাসার নিরাপত্তা কর্মী পদে রফিকুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়েছেন। রফিকুল সম্পর্কে আমাদের ভাতিজা। সে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে সৌদি আরবে গেছে। এখনও সে সৌদিতে রয়েছে। সেই রফিকুলের সনদ ব্যবহার করে তার বড় ভাই নজরুল ইসলাম চাকরি করছে। যে ছেলেটা বিদেশে রয়েছে তাকে কী করে চাকরি দেয়? এটা কি করে সম্ভব? বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছি।

বনগ্রামের নাজিমুদ্দিন বলেন, নিরাপত্তা কর্মী পদে আমিসহ ৬ জন প্রার্থী ছিলাম। শিক্ষকরা একেকজন প্রার্থীকে ডেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেন। এক পর্যায়ে রফিকুল ইসলামের নাম ডাকা হয়। তখন তার বড় ভাই নজরুল ইসলাম হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর এবং পরীক্ষায় অংশ নেন। আমরা এই জালিয়াতির সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে বনগ্রাম ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার ইউনুছ আলী বলেন, 'আমরা বিধি অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। যদি কোনো প্রার্থী তথ্য গোপন করে, তার জন্য আমরা দায়ী নই। এখানে নিয়োগে অর্থের কোনো লেনদেন হয়নি। এ বিষয়টি ডিজির প্রতিনিধি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দেখার দায়িত্ব।'

এ ব্যাপারে মাদরাসার নিয়োগপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমার সব কাগজপত্র ঠিক আছে। আমি স্থানীয় দলীয় কোন্দলের শিকার। তাই প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে।'

মুকসুদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন মোল্লা বলেন, 'আমরা বিধি অনুযায়ী নিয়োগ দিয়েছি। যদি কেউ তথ্য গোপন করেন সে দায়িত্ব আমার নয়।'

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। এ ঘটনায় যদি কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.005748987197876