সম্প্রতি ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি গঠিত তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ শেষ হলেও তা জমা হয়নি।
এমতাবস্থায় স্থবির হয়ে পড়েছে জবি শাখা ছাত্রলীগের কার্যক্রম। সাবেক ও বর্তমান নেতাদের অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন প্রভাবিত করতেই এই বিলম্ব। এদিকে কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের পর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতাদের দু গ্রুপের মহড়াকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি শাখা ছাত্রলীগের দু গ্রুপের সংঘর্ষের জের ধরে ক্যাম্পাসে সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় কেন্দ্রীয় সংসদ। এছাড়া ঘটনা তদন্ত করতে সোহান খান, আরেফিন সিদ্দিক সুজন, আল নাহিয়ান খান জয়, ইয়াজ আল রিয়াদকে নিয়ে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটিকে এক সপ্তাহের ভেতর প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা না হওয়ায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে শাখা ছাত্রলীগের কার্যক্রম। কোনো প্রকার নির্দেশনা না পাওয়ায় সাধারণ কর্মীরাও নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া প্রসঙ্গে কমিটির সদস্য সোহান খান বলেন, প্রতিবেদন প্রভাবিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সময়ের অভাবে সভাপতি-সম্পাদককে একসাথে পাওয়া যাচ্ছে না। একসাথে পেলেই আমরা এ বিষয়ে কথা বলবো। বারবার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য দোষীদের যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে।
এদিকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ করলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর অনুসারী হিসাবে দাবি করে দুটি গ্রুপ ক্যাম্পাসে নিয়মিত শোডাউন দিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুসারী দুটি গ্রুপ ক্যাম্পাসে তাদের উপস্থিতি শুরু করলে তাদের দলে ভিড় জমাচ্ছেন ক্যাম্পাস ও আশপাশে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, প্রশ্নফাঁস এবং দলীয় বিশৃঙ্খলার দায়ে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতারা।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুসারী দুটি গ্রুপের একাধিক নেতা দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশেই তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান শুরু করছেন। এদিকে ক্যাম্পাসে নতুন উপগ্রুপ কয়েকটির নিয়মিত মহড়া ও শোডাউনে ক্যাম্পাসে আবার বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলছে, যারা শোডাউন করছে তারা সামনের কমিটির পদপ্রত্যাশী ভেবে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, যেহেতু জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তাই ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীরা মনে করছেন তাদের নেতা হতে হবে। এই সুবাদে ক্যাম্পাসে তারা তাদের নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে।