জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাত দখল করে জাতীয়করণের দাবিতে প্রায় দুই মাস ধরে অবস্থান নিয়েছিলেন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক। রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ের মধ্যেও তাঁরা ছিলেন ফুটপাতে। কিন্তু দুই মাস আন্দোলনের পর কোনো আশ্বাস না পেয়ে খালি হাতে ফিরে গেছেন শিক্ষকরা। ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার এক দিন আগে গত শনিবার তাঁরা তাঁদের আন্দোলন স্থগিত করেন।
গত ১৬ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রথমে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন শিক্ষকরা। পরে ২৯ জুন প্রতীকী অনশন করে ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি পালন করেন। এরপর ৩ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা।
জানা যায়, টানা দুই মাসের আন্দোলনে ৩১৫ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৫ জন শিক্ষক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এর পরও জাতীয়করণের দাবি বাস্তবায়নের কোনো সম্ভাবনা না দেখে রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েন তাঁরা। এ কারণে অনেক শিক্ষক একে একে বাড়ি ফিরতেও শুরু করেন।
বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘৫৫ দিন আন্দোলন করে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমাদের অনেক শিক্ষক অসুস্থ। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি।’
২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে সরকারের পক্ষ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ঘোষণার পর সারা দেশে ২৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। সব শর্ত পূরণ করেও প্রায় চার হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ বঞ্চিত হয় বলে দাবি করেন শিক্ষক নেতারা।
তবে, গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সাবেক গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ও বর্তমান গণশিক্ষা সচিবের দেয়া তথ্যমতে, শিক্ষক নেতাদের দাবি সত্য নয়। সব যোগ্যপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হয়েছে। যারা আন্দোলন করছেন তারা জাতীয়করণের খবর পেয়ে রাতারাতি প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। নানাভাবে তদবির ও আন্দোলন করে জাতীয়করণ বাগিয়ে নিতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।