জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত জাবির সেই ভর্তিচ্ছু বিশেষ ব্যবস্থায় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আজ রোববার সকাল ৯ টায় ‘সি’ ইউনিটের প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় আহত পরীক্ষার্থী মেডিকেল বেডে শুয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়। আহত শিক্ষার্থীর নাম আজীম হোসাইন রনি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে।
জানা যায়, গত ২৬শে সেপ্টেম্বর মীর মশাররফ হোসেন হল গেট থেকে প্রধান গেটে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে জাবির ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী রনি। ছিনতাইকারীর ধারালো অস্ত্রের কোপে তার পায়ের রগ কেটে যায়। পরে রনিকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ২০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন ও নগদ ২ হাজার টাকা নিয়ে ফেলে চলে যায়। আহত রনি কোনমতে ডেইরি গেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করান।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শাখা ছাত্রলীগ, মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম জেলা সমিতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা রনির চিকিৎসায় আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়ান। শনিবার রনিকে দেখতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল টিমের সহযোগিতায় আজ রোববার বিশেষ ব্যবস্থায় তার পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে এসে এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে এটা কাম্য নয়। ফলে আমরা তার পাশে দাঁিড়য়েছি এবং তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি। সেইসঙ্গে তার চিকিৎসার জন্য সবাই এগিয়ে আসছে। এছাড়া সাভার থানা পুলিশ ও আশুলিয়া থানা পুলিশকে আমরা আরও সতর্ক হতে বলেছি। প্রতিদিন সন্ধ্যায় তারা টহল দিচ্ছে।
এদিকে রনির সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার রনির পায়ে একটি ছোট অস্ত্রোপচার হয়েছে। আগামীকাল সোমবার আরেকটি অস্ত্র পাচার করার প্রয়োজন পড়বে বলে জানান কর্তব্যরত ডাক্তার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তার চিকিৎসার আর্থিক সংকুলান হচ্ছে বলে জানান রনির সঙ্গে থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মিনহাজুল ইসলাম।
শুরু থেকে রনির সঙ্গে থাকা শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসাইন চলেন, আমি প্রধান গেটে টাকা রিচার্জ করতে গিয়ে দেখি রনি নামে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী কাতরাচ্ছে। পরে আমরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরও তার অবস্থার পরিবর্তন না হলে আমরা তাকে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। ডাক্তাররা জানান, তার পায়ের নার্ভ কেটে গেছে। আমরা কোনমতে নিজেদের টাকায় তাকে ভর্তি করায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা রনির চিকিৎসার জন্য হাত বাড়ান।