জালিয়াতি করে নিয়োগ পাওয়া উপাধ্যক্ষের এমপিও বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নিয়োগ কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর ও চিঠি জাল করে নিয়োগ পেয়েছিলেন উপাধ্যক্ষ। নিয়োগের কাম্য যোগ্যতা না থাকলেও ভোলার চর ফ্যাশন উপজেলার মিয়াজুন ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছিলেন শরীফ মো. মনিরুল ইসলাম। নিয়োগ কমিটির সদস্যদের চিঠি ও স্বাক্ষর জাল করা হয়েছিল। কিন্তু অবশেষে ফাঁস হয়েছে সব কুকর্ম। জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় মাদরাসাটির উপাধ্যক্ষ শরীফ মো. মনিরুল ইসলামের এমপিও বন্ধ করেছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। 

একই সাথে তার এমপিও কেন স্থায়ীভাবে বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে উপাধ্যক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) উপাধ্যক্ষকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়। 

এদিকে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেছেন, জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বা এমপিওভুক্ত হওয়া কেউ মাফ পাবেন না। 

জানা গেছে, মাদরাসাটির উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়ে গত মে মাসে এমপিওভুক্ত হয়েছেন শরীফ মো.  মনিরুল ইসলাম। তবে, উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে যথাযথ অভিজ্ঞতার যোগ্যতা তার ছিল না। যার প্রমাণ পেয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। উপাধ্যক্ষকে পাঠানো শোকজ নোটিসে বিষয়টি উল্লেখ করে অধিদপ্তর বলেছে, তার নিয়োগে বিদ্যামান এমপিও নীতিমালা মানা হয়নি। তার এমপিওভুক্তির কাগজ পত্র পর্যালোচনা করে জালিয়াতির প্রমাণও পেয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।  

অভিজ্ঞতার যোগ্যতার স্বল্পতা থাকা উপাধ্যক্ষকে নিয়োগ দিতে নিয়োগ কমিটির প্রতিনিধিদের স্বাক্ষর ও চিঠি জাল করা হয়েছে। যার প্রমাণও পেয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। 

জানা গেছে মাদরাসাটিতে উপাধ্যক্ষ নিয়োগের প্রথম নিয়োগ বোর্ড গতবছরের ১৩ এপ্রিল ঢাকার মদিনাতুল উলুম মডেল মহিলা কামিল মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরীক্ষার সময় তখনকার ডিজির প্রতিনিধি মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম পরীক্ষার স্থান ত্যাগ করেন। ফলে, নিয়োগ বোর্ড স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু তখনকার টেবুলেশন শিটে দেখা যায় শরীফ মো. মনিরুল ইসলাম একজন প্রভাষক ও তার কাম্য যোগ্যতা নেই। নিয়োগ বোর্ড স্থগিত থাকলেও জালিয়াতি করে নিয়োগ দেয়া হয় শরীফকে। তাই সেবছর প্রথম নিয়োগ পেয়েও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি তিনি। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সে নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল অদুদ।  রিপোর্টে তিনি জানিয়েছেন, তিনি টেবুলেশন শিটে স্বাক্ষর না করলেও তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।  

পরে চলতিবছর মার্চ মাসে আবারও উপাধ্যক্ষ নিয়োগে উদ্যোগ নেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এবার অধিদপ্তর থেকে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল সহকারী সচিব পদমর্যাদার কোন কর্মকর্তাকে। কিন্তু সে চিঠি জাল করে ভোলার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে দেখানো হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে নিয়োগের কাগজপত্রে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর আছে। এভাবে জালিয়াতি করে নিয়োগ পান শরীফ মো. মনিরুল ইসলাম। পরে জালিয়াতি করা কাগজপত্র জমা দিয়ে গত মে মাসে এমপিওভুক্ত হন। কিন্তু তার আগের কাগজ পত্র দেখে জালিয়াতির প্রমাণ পায় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। 

অধিদপ্তর থেকে পাঠানো শোকজ নোটিশে বলা হয়, জালিয়াতি করে নিয়োগ পাওয়া ও এমপিওভুক্ত হওয়া  শরীফ মো. মনিরুল ইসলামের এমপিও স্থাগিত করা হল। তার এমপিও কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে উপাধক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে অধিদপ্তরে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে উপাধ্যক্ষকে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা - dainik shiksha রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ - dainik shiksha ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ - dainik shiksha উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ - dainik shiksha আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.016369104385376