জিপিএ-৫ এখন নির্যাতন: সংস্কৃতিমন্ত্রী

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

জিপিএ-৫ এর নামে বাচ্চাদের ওপর এখন নির্যাতন চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, ভাল রেজাল্ট ছাড়া বড় মানুষ হওয়া সম্ভব নয় এমন ভুল ধারণা সমাজে তৈরি হয়েছে। এ ভুল ধারণার কারণে মানুষ আকাশ, ফুল, প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা পদ্ধতি সেভাবে গড়ে উঠছে। জিপিএ-৫ এর আশায় অভিভাবকরা শিশুদের শুধু বইয়ে আটকে রাখছেন।

জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জিসিআই) আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 'পরিবর্তিত হও: ছকের বাইরে ভাবো' শিরোনামে সিম্পোজিয়ামটি রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এটি সঞ্চালনা করেন জেসিআইয়ের জাতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ইরফান হক।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সকালে শিশুদের জোর করে ঘুম ভাঙ্গিয়ে স্কুলে নিয়ে যান অভিভাবকরা। এখনকার স্কুলে খেলাধুলার কোনো সুযোগ থাকে না। মাঠও থাকে না। বাসায় ফিরে শিশুদের স্কুলে পড়া, হোম ওয়ার্ক নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। অভিভাবকরা শিশুদের অল্প কিছু সময় দেন কার্টুন, মোবাইল বা কম্পিউটারে গেমস খেলার জন্য। এ গণ্ডির মধ্যে এখন শিশুর জীবন আটকে গেছে।

তিনি বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকে গান, নাচ, ছবি আঁকা, আবৃত্তি, খেলাধুলার মধ্য দিয়ে শিশুদের প্রকৃত মানুষ হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু আমরা ঠিকমতো এটা করতে পারছি না। এ কারণে সমাজে অন্ধকার আসে। হলি আর্টিজানের মতো ঘটনা ঘটে। জঙ্গি তৈরি হয়। অন্তঃসত্ত্বা নারীও এসব জঙ্গির হাত থেকে রক্ষা পায় না।

মন্ত্রী বলেন, অভিভাবকরা তাদের ক্যারিয়ার কেন্দ্রিক ভাবনার কারণে শিশুদের সময় দেন না। সারা দিন ক্যারিয়ারে পেছনে ছুটেন আর বাসায় থাকলেও তারা মোবাইল বা টিভি সিরিয়াল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এ কারণে অভিভাবক ও শিশুদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হচ্ছে। এ বিচ্ছিন্নতাই শিশুদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যিনি যে কাজ করছেন সে কাজ সততা, নিষ্ঠা আন্তরিকতার সঙ্গে করলে সাফল্য আসবেই। দেশও এগিয়ে যাবে। সাফল্যের কোনো শটকাট পথ নেই। খেলাধুলা, গান-বাজনা করেও এখন অনেক বেশি আয় করা সম্ভব। অনেক বেশি আয়ের চেয়ে জরুরি হলো ভাল মানুষ হওয়া। শুধু ভাল ফলাফল দিয়ে দক্ষতা তৈরি হয় না। আবার মাথাপিছু আয় বাড়িয়ে বড় মানুষ হওয়া যায় না। মানবিক মানুষ তৈরি জন্য শিক্ষার ধরণ, শিক্ষা ব্যবস্থা, মানুষিকতা পরিবর্তন করতে হবে।

জেসিআই'র উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াকার চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ মানুষের বয়স এখন ৩৫ এর নিচে। এরাই এ দেশের সম্পদ, আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের কাজে লাগিয়ে দেশের এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। সে লক্ষ্যেই কাজ করছে জেসিআই।

তরুণদের মধ্যে সফল উদ্যোক্তা তৈরি উদ্দেশে এ সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে জেসিআই। প্রায় ৭০০ তরুণ এতে অংশ নেয়। অংশগ্রহনকারী তরুণদের মাঝে অনুপ্রেরণা জোগাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ১২ ব্যক্তিত্ব তাদের পথ চলার সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। 

এর মধ্যে বক্তব্য দেন সফল নারী উদ্যোগক্তা আফরোজ পারভিন, চলচ্চিত্র নির্মাতা খিজির হাইয়াত খান, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব নূসরাত ফারিয়া, গ্রামীণ ফোনের প্রধান কর্পোরেট অফিসার মাহমুদ হোসেন, একশন এইডের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নুরুন নাহার বেগম। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055069923400879