আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় এমসিকিউ (বহুনির্বাচনী প্রশ্ন) থাকছেই। তবে নম্বর কমানো হতে পারে। এ বিষয়ে রোববার (২০ মে) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনে তিনদিনব্যাপী কর্মশালা শুরু হয়েছে। ২২ মে পর্যন্ত এ কর্মশালা চলবে। কর্মশালায় স্কুল শিক্ষক, উপজেলা শিক্ষা কর্মকতা,জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন। কর্মশালায় বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ২২ মে জেএসসির মানবণ্টন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এনসিটিবি।
এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, এমসিকিউ যেটা আছে সেটা একটু কমবে। এমনকি নম্বরও কমতে পারে। তবে তিন দিনের কর্মশালা শেষে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ২২ মে মানবণ্টন চূড়ান্ত করা হবে। চূড়ান্ত হওয়ার পর সুপারিশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা নম্বরটা কমিয়ে দেবো। বই যা আছে তাই থাকবে। যেমন বাংলা দুইপত্র মিলে ২০০ নম্বরের জায়গায় হয়তো ১৫০ করা হতে পারে। এরমধ্যে প্রতিপত্র ৭৫ নম্বর করে অথবা একটি ৮০ অন্যটি ৭০ নম্বর করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে আনন্দ পাঠ র্যাপিড রিডিং বাদ হতে পারে।
এদিকে রোববার (২০ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা থেকে নম্বর ও বিষয় কমানোর বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায়। এ জন্য ২৭ মে এনসিসিসির সভা ডাকা হয়েছে। বৈঠক সূত্র দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে এতথ্য জানিয়েছে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র স্কুল দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা থেকে সাতটি বিষয়ে মোট ৬৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করেছে। বর্তমানে চতুর্থ বিষয়সহ ১০টি বিষয়ে মোট ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়।
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, জেএসসিতে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র মিলে ১০০ নম্বরের একটি পরীক্ষা হবে। ইংরেজিতেও দুই পত্র মিলে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এখন দুই পত্রের জন্য দুটি পরীক্ষা হয়, দুটি পত্র মিলিয়ে মোট নম্বর থাকে ১৫০। প্রস্তাব অনুযায়ী চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষা এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। তবে গণিত, ধর্ম, বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা আগের মতো আগের নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, পাবলিক পরীক্ষায় দেশে প্রথবারের মতো এমসিকিউ প্রশ্নের প্রচলন শুরু হয় ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে। ওই বছর এসএসসিতে এমসিকিউ প্রশ্ন প্রবর্তন করা হয়েছিল। তখন মোট ৫০টি বহু নির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো পরীক্ষার্থীদের। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ নম্বর করে। দীর্ঘদিন এ ব্যবস্থা চলার পর প্রশ্ন ফাঁস এবং এমসিকিউর উত্তর শিক্ষকেরা পরীক্ষার হলে বলে দেয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রথমে বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) অংশের উত্তর দেয়ার বিধান চালু করা হয়। পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় পরীক্ষার্থীদের। এ ছাড়া ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে এমসিকিউ পরীক্ষায় ১০ নম্বর কমিয়ে ৩০ নম্বরে উত্তর দিতে হয় পরীক্ষার্থীদের।