'লেখা পড়ার বয়স নাই, চলো সবাই স্কুলে যাই' এ স্লোগানকে সামনে রেখে ৩৬ বছর বয়সে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন সালমা বেগম। তিনি সাদুল্লাপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহেদ সরকারের মেয়ে। সে মহিপুর বাজার দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী। তিনি সাদুল্লাপুর ২ (ছাইগাড়ী) কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে বিজ্ঞান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সালমা খাতুন।
পরীক্ষার্থী সালমা খাতুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ১০ ভাইবোনের অভাবের সংসারে ১৫ বছর আগে বাবা মা মারা যাবার পর সংসারের হাল ধরতে গিয়ে পড়ালেখা বা বিয়ে কোনোটাই করা সম্ভব হয়নি তার। গার্মেন্টসে চাকরির জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও সার্টিফিকেটের অভাবে চাকরি পাননি সালমা। চাকরির জন্য অন্তত একটি সার্টিফিকেট দরকার তার। আগে থেকে যদি পড়ালেখা করতাম তাহলে আজ অভাব-অনটনে থাকতে হতো না। এখন বুঝতে পেরে পড়াশুনা শুরু করেছি। একজন নারী হয়ে এ বয়সে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে চাই। আমার যদি সার্টিফিকেট থাকত তাহলে এ জীবনে এত কষ্টে ভোগ করতে হতো না।
সালমা বলেন, যখন তিনি বুঝতে পেরেছেন, চতুর্থ শ্রেণির একটি চাকরির আবেদন করতে হলেও অন্তত অষ্টম শ্রেণির একটি সনদপত্র দরকার হয়। তাই তিনি মহিপুর বাজার এ কে বালিকা দাখিল মাদরাসায় ভর্তি হয়ে নিয়মিত পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাদুল্যাপুর ২ (ছাইগাড়ী) কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব এটিএম রফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বয়স হলেও পড়ালেখা কোনো হাস্যকর ব্যাপার নয়। এই মূল মন্ত্র ধারণ করে সালমা নিয়মিত ছাত্রী হিসেবেই চলমান জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রোগ্রামার অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। যে কোনো বয়সে লেখাপড়া করা যায়। তার অনন্য উদাহরণ পরীক্ষার্থী সালমা খাতুন। জ্ঞান অর্জনে বয়সের চেয়ে নিজের ইচ্ছা শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে ছালমা বেগম লেখাপড়া বর্তমান সমাজ ও দেশের জন্য একটি উদাহরণ।