মাগুরা সদর উপজেলার রাঘবদাইড় ইউনিয়নের বেরইল শামসুদ্দিন দাখিল মাদরাসা ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনেই লেখাপড়ার কাজ চালাতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে প্রায়ই আহত হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। সমস্যার সাময়িক উপশম পেতে ছাদের সঙ্গে কোথাও কোথাও বাঁশ দিয়ে ঠেকনা দিয়ে রাখা হয়েছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এখনো কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি।
মিতা খাতুন, মোসা. মিম খাতুন, মো. নাজমুল ইসলাম, মো. তৌকির ইসলামসহ একাধিক ছাত্রছাত্রী জানায়, মাদরাসার প্রতিটি ক্লাসরুমের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। মাঝে মধ্যে বড় বড় খণ্ড খসে পড়ে।
ইতোপূর্বে দু’একজন আহতও হয়েছে। ক্লাসে গেলে সব সময় ভয়ে থাকতে হয় বড় কোনো অংশ মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ে কিনা। বর্ষার সময় ছাদ থেকে পানি পড়ে ক্লাসরুম ভিজে যায়। রুমের মধ্য থেকে সেচে পানি বের করতে হয়। এ জন্য লেখাপড়াও মনোযোগ দিতে পারে না তারা। এতে অনেক ছাত্রছাত্রীই মাদরাসায় আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
মাদরাসার শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ মাদরাসার পাসের হার সন্তোষজনক। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে সরকারের ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে এ বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়। এর পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির আর কোনো সংস্কার হয়নি। বর্ষায় পানি জমে ছাদের অধিকাংশ জায়গায় ড্যাম্প ধরে ধসে গেছে। অনেক জায়গায় ছাদ থেকে রড বের হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও জং ধরা রডও ভেঙ্গে পড়ছে। এতে ছাত্রছাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিল্ডিংয়ের দুর্দশা দেখে অনেক অভিভাবকই এখানে ছেলে মেয়েদের ভর্তি করাতে চান না।
মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ জানান, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিয়েও মাদরাসা বিল্ডিংয়ের সংস্কার করানো সম্ভব হয়নি। প্রায় ৬শ’ শিক্ষার্থী নিয়ে এলাকার সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে তিনি সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মাদরাসার সহকারী সুপার মাওলানা মো. আজম জানান, মাদরাসার ক্লাসরুমের দৈন্য-দশায় প্রতি মুহূর্তে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়। যে কোনো অঘটন ঘটে গেলে কাকে কি জবাব দেব। কিন্তু আমাদের তেমন কিছুই করার নেই। কর্তৃপক্ষ যদি বিষয়টি দ্রুত ব্যবস্থা নেন তাহলে আমরা সবাই উপকৃত হব।
এ ব্যাপারে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাগুরা অফিসের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, মাদরাসার অবকাঠামো উন্নয়নে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইতোমধ্যে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুত প্রতিষ্ঠানটির ঝুঁকিপূর্ণ অবকাঠামো অপসারণ করে নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা সম্ভব হবে।