নীলফামারীর ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে জাল নিবন্ধন সনদে এমপিওভুক্তির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া কলেজের অধ্যক্ষ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বৈধ করে এমপিওভুক্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জাল কাগজে এমপিওভুক্তির জন্য সুপারিশ করেন। জাল কাগজে সুপারিশ পত্রে প্রভাষকের এমপিওভুক্ত হয়, যা চলতি মাসের ৮ তারিখে উত্তোলন করেন আফিউল ইসলাম।
অভিযোগে জানাগেছে, নীলফামারীর ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের আইসিটি প্রভাষক পদে জাল নিবন্ধন পত্রে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ ফেব্রুয়ারি যোগ দেন আফিউল ইসলাম। একই বছরের ৫ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হাসিম হায়দার অপু এমপিওভুক্তির জন্য পত্র পাঠান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে। কিন্তু কয়েক দফা অনলাইনে আবেদন পাঠানোর পরেও আবেদন বাতিল করা হয়েছিল।
প্রভাষক আফিউল ইসলামের নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে যে নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করা হয়েছে সেটির রোল নং- ৪২৭১০০৭৪, রেজি নং-৯০০০৭২৩১/২০০৯ (কম্পিউটার সাইন্স), তা অনলাইনে প্রদর্শন করে না। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগটি বৈধ করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হাসিম হায়দার অপু ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হালিম।
কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলা কোটা অনুসরণ করেনি। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল অবকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর ১৮ নম্বর গ এবং ঙ কলামে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, মিথ্যা তথ্য প্রদান, অবৈধ শিক্ষক নিয়োগ, ভুয়া শাখা ইত্যাদি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর বা বোর্ডের আপিল ও আরবিট্রেশনের সিদ্ধান্ত প্রতিপালন না করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কর্মচারী এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানের বেতন ভাতা স্থগিত বা বাতিল করা হবে এবং এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে জাল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ অথবা নিবন্ধন সনদ প্রদান, জাল নিয়োগ সংক্রান্ত রেকর্ড প্রদান মহিলা কোটা অনুসরণ ব্যতীত শিক্ষক নিয়োগ এবং প্যাটার্ন বহির্ভুত পদে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন পাঠালে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কর্মচারীর বেতন ভাতা স্থগিত বা বাতিল করা হবে।
এ ব্যাপারে ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের আইসিটি প্রভাষক আফিউল ইসলাম বলেন, আমার নিবন্ধন সঠিক রয়েছে, আগুন লেগে কম্পিউটারের কিছু ডকুমেন্ট নষ্ট হওয়ায় আমার নিবন্ধনটি অনলাইনে শো করছে না।
কলেজের অধ্যক্ষ হাসিম হায়দার অপু বলেন, নিয়োগের সময় সকল সনদ পরীক্ষা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি। এমপিওর জন্য যখন কলেজ থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয় তা কাগজপত্রসহ তিনটি জায়গায় যায়। প্রথমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে, সেখান থেকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে এবং সেখান থেকে শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক উপপরিচালকের কার্যালয়ে যায়। তারা সব কাগজ পরীক্ষা করে এমপিওভুক্ত করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হালিম বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রথমে এমপিও আবেদন যাচাই বাছাই করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে পাঠান। এরপর কোনো ভুলত্রুটি থাকলে তা ফেরত দেওয়া হয়। এরকম কোন লিখিত অভিযোগ আসলে আমি বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখার চেষ্টা করব।