টেন্ডার ছাড়াই স্কুল ভবন বিক্রির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

যশোর প্রতিনিধি |

যশোরের কেশবপুরে ভান্ডারখোলা সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক টাকা মূল্যের পুরনো ভবনসহ অর্ধ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন হলেও তা প্রায় ৩ মাসে অনুমোদন হয়নি। ফলে অর্থ কমিটি গঠন ছাড়াই চলছে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড। এ নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, কেশবপুরের রাজবিহারী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু সাইদ ২০১৮ সালের ১৪ জুন নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে ভান্ডারখোলা সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং ওই দিনই তিনি প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। গত বছর ১৩ জুন সর্বশেষ নিয়োগ বিধিতে উল্লেখ রয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি কোন প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নিতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কমপক্ষে ৩ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু আবু সাইদ এ বিধি ভঙ্গ করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই বিদ্যালয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। যে কারণে গত এক বছরেও তিনি এমপিওভুক্ত হতে ব্যর্থ হন। তিনি যোগদান করেই কারও তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামতো প্রতিষ্ঠানটি চালাতে থাকেন। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়।

অভিভাবক সদস্য দীপঙ্কর দাস অভিযোগ করেন, বিগত ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হলে গত ৪ জুন বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকলের সম্মতিতে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন বিদ্যালয়ের সভাপতি মনোনীত হন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা ও সময় ক্ষেপণের কারণে দীর্ঘ প্রায় ৩ মাসেও তিনি সভাপতির দায়িত্ব বুঝে পাননি। এ সুযোগে ওই প্রধান শিক্ষক বর্তমান কমিটিকে পাশ কাটিয়ে সাব কমিটি গঠনের নামে কোন টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক টাকা মূল্যের পুরাতন ভবন ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রিসহ জমি কেনার ওজুহাত দেখিয়ে বিদ্যালয়ের বৃহদাকার ৮টি মেহগনী গাছ কর্তন করেন। অথচ তিনি এ অর্থ প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে জমা না দিয়ে কোন অর্থ কমিটি গঠন ছাড়াই নিজের ইচ্ছামতো ব্যয়ের নামে আত্মসাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গত ১১ আগস্ট সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ভবন ভাঙ্গার কাজ প্রায় শেষের পথে। কাঠ ব্যবসায়ী গাছ কর্তন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অপরদিকে, প্রধান শিক্ষক অফিস কক্ষে ভবন বিক্রি ও গাছ বিক্রির টাকা হজম করতে কথিত সাব কমিটির সদস্যদের নিয়ে জরুরি সভা করছেন।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ বলেন, প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতের কোন সুযোগ নেই। সাব কমিটির সম্মতিতে খরচ করা হচ্ছে। টেন্ডার দিতে গেলে সময় লাগবে যে কারণে সাব কমিটির সিদ্ধান্তে ভবন ভাঙ্গার কাজ চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি নিয়োগকে বৈধ দাবি করে বলেন, ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল যখন পত্রিকায় প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় সে সময় এ ধরনের নীতিমালা ছিল না। নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তিনি এপিওভুক্তির জন্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। তাছাড়া নতুন কমিটি অনুমোদনের জন্যে বোর্ডে আবেদন করা হয়েছে। এখনও অনুমোদন হয়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এ সংক্রান্ত ব্যাপারে কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি। করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043749809265137