ডাকসু ভোটে কোনো অনিয়ম পায়নি ঢাবি কর্তৃপক্ষ

ঢাবি প্রতিনিধি |

ডাকসু নির্বাচনে বস্তাভর্তি ব্যালট উদ্ধারের ঘটনায় একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলেও ওই ভোটে অনিয়মের কোনো প্রমাণ পায়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপিত হয়। সেখানে অনিয়মের প্রমাণ না পাওয়ার কথা উঠে এসেছে বলে একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য জানিয়েছেন।

বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ খারিজ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন তারা।

২৮ বছর পর গত ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনের সকালে কুয়েত-মৈত্রী হলের একটি কক্ষ থেকে বস্তাভর্তি ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার উদ্ধার হয়। এছাড়া বিভিন্ন হলে শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে বাধাসহ নানা অভিযোগ উঠে আসে।

অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ভোট শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে ছাত্রলীগ ছাড়া সব প্যানেল ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। ওই নির্বাচনের ফল বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২১ মার্চ সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রথমে তাদের সাত কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও পরে সময় বাড়ানো হয়। সেই প্রতিবেদন উপাচার্যের কাছে জমা পড়ার এদিন সিন্ডিকেট সভায় তোলা হয়।

সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে যেসব অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছে, সেই অভিযোগগুলোর উল্লেখযোগ্য কোনো সত্যতা না পাওয়া যায়নি। অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি আগামী ডাকসু নির্বাচনের জন্য কিছু সুপারিশ দিয়েছে। যেমন, অমোচনীয় কালি ব্যবহার, ব্যালটে সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার ইত্যাদি, এই বিষয়গুলো ভবিষ্যৎ ডাকসু নির্বাচনের জন্য বিবেচনায় নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক সাজেদা বানুকে আহ্বায়ক করে গঠিত ওই তদন্ত কমিটিতে ছিলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির কাছে এমন কেউ অভিযোগ করেননি যারা ভোট দিতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে বা যারা সময়ের অভাবে ভোট দিতে পারেননি। এছাড়াও ভোটের দিন কেউ কোনো হলের প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দেননি। যারা অভিযোগ দিয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন পেপার কাটিং দিয়েছেন। কিন্তু এগুলোর ভিত্তিতে তো অনিয়ম প্রমাণ করা যায় না।

তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. ইমদাদুল হক, স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রাধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিক উজ জামান এবং পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শারমিন রুমি আলীম।

তাদের তদন্তে নির্বাচনে কোনো অনিয়ম প্রমাণিত না হলেও কুয়েত মৈত্রী হলে ব্যালট উদ্ধারের ঘটনায় হলটির ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ শবনম জাহানকে প্রথমে ওই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর তাকে সাময়িকভাবে চাকরিচ্যুত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সিন্ডিকেট সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অধিভুক্ত সাত কলেজের ৪২ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অসদুপায়সহ বিভিন্ন শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027539730072021