‘নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া’ মোকাবিলা করার লক্ষ্যে একটি বিশেষ আইনের খসড়া তৈরি করছে ইতালি। দেশটির ক্ষমতাসীন দল ডিজিটাল আসক্তি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য নতুন বিলটি নিয়ে কাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে- এ বিলের দ্বারা তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারের প্রতি আসক্তি রোধ করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ‘নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া’ বা নোমোফোবিয়া হচ্ছে- মোবাইল থেকে দূরে থাকার কারণে কারো মধ্যে অস্থীরতা তৈরি হওয়া। মোবাইলটি ঠিক জায়গায় আছে কিনা, বা তা হারিয়ে গেল কিনা এ নিয়ে সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকাকেই নোমোফোবিয়া বলা হচ্ছে।
আর সবচেয়ে বড় কথা হলো- মোবাইল ফোনের বিভিন্ন অ্যাপ বা সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত আপডেট না জানলে বা না দেখলে মনে হয় গুরুত্বপূর্ণ কী জানি মিস হয়ে গেল। গবেষকরা মোবাইলের সঙ্গে কানেকশন বা যোগাযোগ হারানোর এই ভয়জনিত সমস্যার নাম দিয়েছেন ‘নোমোফোবিয়া’, যার পুরো নাম ‘নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া’। আর এ সময়ে নোমোফোবিয়ায় ভুগছে যুক্তরাজ্যের ৫৩ শতাংশ তরুণ। ভারতীয় তরুণদের মধ্যে এ হার ২৯ শতাংশ।
জানা গেছে, ইতালির ওই খসড়া আইনে সন্তানের মা-বাবা ও অভিভাবকদের জন্য শিক্ষামূলক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাতে তারা সন্তানদের অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়টি ধরতে পারেন। এছাড়া উক্ত আইনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির কথা রয়েছে।
ইতালির ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব টেকনোলজিক্যাল ডিপেনডেন্সের এক গবেষণা প্রতিবদন থেকে জানা যায়, নোমোফোবিয়া সাধারণত তরুণদের মাঝেই বেশি ঘটে। এতে রাতে তাদের ঠিকমতো ঘুম হয় না। এছাড়া ৬১ শতাংশ ইতালিয়ানই রাতে বিছানায় শোয়ার সময় ট্যাবলেট বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ৮১ শতাংশ। আর ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী অর্ধেকের বেশি তরুণ দিনে ৭৫ বারের বেশি মোবাইল ফোন দেখেন।
দেশটির ক্ষমতাসীন দল তাদের খসড়া বিলে মোবাইল আসক্তিকে জুয়ার আসক্তির সঙ্গে তুলনা করেছে। এর ফলে শরীরে ডোপামিন নামক হরমোনের উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত হয়। এ হরমোন দেহের ওজন নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।