ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-ছাত্রসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে আটকের ঘটনায় উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক ঐক্য’। শুক্রবার (২৬ জুন) বিকেলে সংগঠনের বেশ কয়েকজন শিক্ষকের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘বহুমাত্রিক, উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলচেতনা। স্বাধীন বাংলাদেশের সকল নাগরিক তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নির্বিঘ্নে চর্চা করবেন, রাষ্ট্র সকল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করবে এটা আমাদের চাওয়া। কিন্তু গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ করছি, নির্দ্বিধায় মত প্রকাশের নাগরিক অধিকার সংকুচিত হয়ে পড়ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের লাগামহীন ব্যবহার এবং অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আক্রোশ চরিতার্থ করতে এই আইনের অপব্যবহার এক ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।’
এতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দুঃখের সাথে লক্ষ্য করলাম, ফেসবুকে কিছু মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক, ছাত্র, কার্টুনিস্ট, সংবাদকর্মী, রাজনীতিবিদ, এমনকি ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কোনো কোনো ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের মর্যাদা বিশ্ববাসীর চোখে ক্ষুণ্ণ করেছে।
শিক্ষকরা আরও বলেন, নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। সরকারের অথবা সরকারে দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের প্রশংসা ও সমালোচনা অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সমালোচনা একটি নৈমিত্তিক চর্চা। একটি গণতান্ত্রিক সরকার এই সমালোচনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ক্ষমতা প্রদর্শন করে না। আমরা মনে করি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এই লাগামহীন অপপ্রয়োগ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।' ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে তারা আইনটি দ্রুত বাতিল এবং সকল আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন- প্রফেসর ড. সালেহ্ হাসান নকীব, প্রফেসর ড. আফরীনা মামুন, প্রফেসর ড. মো. আক্তার আলী, প্রফেসর ড. দিল আরা হোসেন, প্রফেসর ড. এফ নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, প্রফেসর ড. আহমেদ ইমতিয়াজ, প্রফেসর ড. মো. শামসুজ্জোহা এছামী, প্রফেসর ড.সৈয়দ সরওয়ার জাহান লিটন, প্রফেসর ড. আকতার বানু আল্পনা, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী, অধ্যাপক মো. ছাইফুল ইসলাম শামীবিবৃতিতে স্বাক্ষর কারী শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন, প্রফেসর ড. সালেহ্ হাসান নকীব, প্রফেসর ড. আফরীনা মামুন, প্রফেসর ড. মো. আক্তার আলী, প্রফেসর ড. দিল আরা হোসেন, প্রফেসর ড. এফ নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, প্রফেসর ড. আহমেদ ইমতিয়াজ, প্রফেসর ড. মো. শামসুজ্জোহা এছামী, প্রফেসর ড.সৈয়দ সরওয়ার জাহান লিটন, প্রফেসর ড. আকতার বানু আল্পনা, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী, অধ্যাপক মো. ছাইফুল ইসলাম শামীম, প্রফেসর ড. মো. আতিকুর রহমান পাটোয়ারী, ড. মো. আখতার হোসেন মজুমদার, ড. মোহা. মনিরুল হক, অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুল ইসলাম, ড. মো.ছামিউল ইসলাম সরকার, অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম, অধ্যাপক মো. সাইফুর রহমান, অধ্যাপক মো. রিজু খন্দকার প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, প্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে ফেসবুকে কটুক্তির অভিযোগে গত ১৭ জুন মধ্যরাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।