রংপুরের বদরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের মারধরে আহত হয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) বিকেলে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সবুজ মিয়া (৯) নামে ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনায় সবুজের বাবা ওবায়দুল হক উপজেলার খালিশা হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদরুল আলমের বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, প্রহারের কারণে সবুজ কানে-গালে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছে এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে তাঁকে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সে প্রতিদিনের মতো গত সোমবার স্কুলে যায়। ওই দিন বিকেল তিনটার দিকে ক্লাসে ছোটাছুটি করার সময় সহপাঠী নাসির হোসেনের সঙ্গে তাঁর ধাক্কা লাগে। এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদরুল আলম সবুজের গালে চড়-থাপ্পড় মারেন। এতে কানে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়ে সবুজ অসুস্থ হয়ে পড়ে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে। পাশে তার বাবা ওবায়দুল হক বসে আছেন। এ সময় ওবায়দুল হক বলেন, ‘বাবা মুই গরিব মানুষ। মানুষের বাড়িত কাজ-কাম করি খাও। কোনো দিন ছইলোক মারো নাই। হেড মাস্টার মোর ছইলের কানোত ও গালোত থাপ্পড় মারচে। ছইলের কান তালি নাগচে। ব্যথায় গাল-কান ফুলি গেইচে। জ্বর আসচে। এখানকার (হাসপাতালের) ডাক্তার কানের পর্দা পরীক্ষা করার জন্য রংপুরোত নিগবার কওচে। মোরটে কোনো টাকা নাই। নিগাও কেমন করি?’
ওবায়দুলের অভিযোগ, বিষয়টি জানার জন্য তিনি গত মঙ্গলবার স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে স্কুল থেকে বের করে দেন। ওই বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থী জানায়, প্রধান শিক্ষক শিশু সবুজকে অনেক চড়-থাপ্পড় মেরেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সদরুল আলম বলেন, ‘ঘটনাটি ষড়যন্ত্র। আমি সবুজকে মারিনি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, ‘সবুজের বাম গাল ও কানে ফুলা এবং জখম রয়েছে। তার কানের পর্দা ফেটেছে কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।’