টানা সাত বছর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করে ড. আসাদুজ্জামান এখন স্বপ্ন দেখছেন উপাচার্য পদের। তবে চাকরির বয়স বা অভিজ্ঞতার যোগ্যতার বিবেচনায় তিনি রয়েছেন অনেক পেছনে। ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের শরণাপন্ন হয়েছেন তিনি। তাই, কিছুটা ক্ষুব্ধ দুই প্রভাবশালী এমপি। উপাচার্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে এ ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তারাও।
নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, মেকানিক্যাল বিভাগের একজন শিক্ষক টানা সাত বছর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার যোগ্যতা থাকলে সরকার নিশ্চয়ই তা বিবেচনা করবে। এর জন্য একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে ক্যাম্পাসে ডেকে এনে এভাবে নগ্ন তদবির দুঃখজনক।
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সদস্যরা বলছেন, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের আগে এই শিক্ষককে কখনোই আওয়ামী লীগ বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো শক্তি বা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা যায়নি। ড. মো. আলাউদ্দিন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার পর যন্ত্রকৌশল বিভাগের এই প্রফেসর হঠাৎ করেই ডুয়েটের সবচেয়ে বড় আওয়ামী লীগ পন্থি শিক্ষক বনে যান।
একাধিক সাবেক ছাত্রনেতা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা থেকে শুরু করে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের আগে পর্যন্ত এই শিক্ষককে কখনোই কোন প্রগতিশীল কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে দেখা যায়নি। রাতারাতি তিনি বঙ্গবন্ধু ভক্ত এবং কবিও বনে গেছেন। এমনকি ডিগ্রি প্রকৌশলীদের নিয়ে গঠিত বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সঙ্গেও কখনো যুক্ত ছিলেন না। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলার স্বার্থেই তার মতো একজন জুনিয়র প্রফেসরের উপাচার্যের পদের জন্য প্রতিযোগিতায় নামাটা সঠিক হয়নি।
এদিকে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, সাত বছর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা গ্রেড-২ এই শিক্ষককে উপাচার্য করা হলে অন্যদের জন্য তা অস্বস্তিকর হবে। তাদের মতে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টির স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমের স্বার্থে কমপক্ষে গ্রেড ওয়ান একজন শিক্ষককে উপাচার্যের পদে পদায়ন করলে তা সবার জন্যই কল্যাণকর হবে।
এদিকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সরকার বুয়েটের একজন শিক্ষককে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের অনুসারী ওই শিক্ষক এখনো এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না নেয়ায় তা ঝুলে আছে। শেষপর্যন্ত বুয়েটের ওই শিক্ষক ডুয়েটের উপাচার্য পদে যোগদান করতে সম্মত না হলে সিনিয়রিটি বিবেচনায় ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে ডুয়েটের সিভিল বিভাগের একজন শিক্ষককে উপাচার্য করা হতে পারে।