সচেতনতার বার্তা দিতে হাঁটতে বেরিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পথেই অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেকে। প্রায় ৪০ জনকে ভর্তি করা হয় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুরে গাইঘাটার ঘোঁজা হাইস্কুল থেকে বেরিয়েছিল ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা-মিছিল। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের রোদে-গরমে অনেকটা রাস্তা হাঁটানো হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে স্কুলে কিছু লোক ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। স্কুলে সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার (১০ আগস্ট) আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
এ দিন স্কুলে তৃতীয় পিরিয়ডের পরে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে পদযাত্রা শুরু হয়। অসুস্থ পড়ুয়ারা জানিয়েছে, রোদে-গরমে হাঁটতে গিয়েই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, স্যারেরা জানিয়েছিলেন, আধ কিলোমিটার হাঁটলেই চলবে। কিন্তু হাঁটানো হয়েছে কয়েক কিলেমিটার। সে কথা অবশ্য মানেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘোঁজা এলাকাটি হাবড়া-সংলগ্ন। ঘোঁজা এবং সংলগ্ন এলাকায় ইতোমধ্যেই জ্বর-ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়েছে। ঘোঁজা এলাকার বাসিন্দা বিজলি সরকার নামে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক মহিলা ১ আগস্ট বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে মারাও গিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ওই এলাকায় নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। স্কুলগুলোকেও তাতে সামিল করা হয়েছে। এ দিন ঘোঁজা হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের নিয়ে পদযাত্রা বের করেন।
এ দিন শিক্ষার্থীরা ঘোঁজা মাঠপাড়ার কাছে আসতেই অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে। কেউ কেউ মাথা ঘুরে পড়ে যায়। গ্রামের লোকজন, স্কুল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা তড়িঘড়ি গাড়ি জোগাড় করে অসুস্থদের বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরাও হাসপাতালে ছুটে আসেন। তাঁদেরই একজন অর্চনা মণ্ডল। মেয়ে অর্পিতা পড়ে একাদশ শ্রেণিতে। সে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।
অর্চনা বলেন, ‘‘খবর পেয়ে স্কুলে যাই। শিক্ষকেরা কিছু জানাতে পারেননি। তারপরে হাসপাতালে আসি। স্কুল কর্তৃপক্ষের অসচেতনতার ফলেই এমন ঘটল।’’
পড়ুয়াদের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার কিছু মানুষ স্কুলে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের ঘর-সহ কয়েকটি ঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। বিকেলে স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, গেটে তালা দেয়া। বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হাসপাতালের সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘গরম ও রোদে কয়েক জন প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। কেউ দুপুরে না খেয়ে বা গরমে জল না খেয়ে অসুস্থ হয়েছে।’’ তাঁর মতে, কয়েক জনকে অসুস্থ হতে দেখে বাকিরা গণ হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কয়েক জন বাদে সকলকেই ছুটি দেয়া হয়েছে।
মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিডিও অফিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। কয়েক কিলোমিটার পথ হাঁটানো হয়েছিল কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’