ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী রাইয়ান সরকার (১১) মারা গেছে। আর তার ছোট বোন তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মালিহা সরকারও (৬) স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একই হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাবস্থায় ছয় দিনের সব চিকিৎসা প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে মারা যায় রাইয়ান।
এদিকে গতকাল দুপুরে রাইয়ানের মৃত্যুর এ নির্মম সংবাদ স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সহপাঠী এবং অভিভাবকদের কাছে পৌঁছলে শোকের ছায়া নেমে আসে। সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ফেসবুক পেজে মৃত্যুতে গভীর শোক, সমবেদনা ও দুঃখ প্রকাশ করে খবরটি প্রচার করে। বাদ মাগরিব রাইয়ানের পরম প্রিয় স্কুল আঙিনাতেই জানাজার আয়োজন করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অধ্যক্ষ লে. কর্নেল কাজী শরীফ উদ্দীন।
এতে রাইয়ানের বাবা, আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক অভিভাবক বেদনাবিধুর পরিবেশে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
রাত ৯টায় (বাদ এশা) তেজগাঁওস্থ রহিম মেটাল জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাজধানীতেই রাইয়ানকে দাফন করা হয়। গত ২৮ জুলাই থেকে সে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর নানা ধরনের প্রক্রিয়া এবং হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে ৩১ জুলাই স্কয়ার হাসপাতালে ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছেন রাইয়ানের বাবা মমিন সরকার। অবস্থার অবনতি হলে ১ আগস্টে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার।
রাইয়ানের বাবা এসিআইয়ের জোনাল সেলস ম্যানেজার মমিন সরকার বলেন, এই দেশের এমনকি বিশ্বের আর কোনো দেশে যেন কোনো পিতা-মাতাকে সন্তান হারা হতে না হয়। এ মরণব্যাধি ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাঁচতে অভিভাবকসহ সব মহলের সতর্ক ও সচেতন থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন।
এদিকে নোয়াখালীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গতকাল শুক্রবার মোশারেফ হোসেন (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার হুগলী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি স্থানীয় প্রাইম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মোশারেফ গত পাঁচ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. সালাউদ্দিন মামুনের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে তিনি প্রাইম হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা না করে পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ প্রাইভেট হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করান। পরীক্ষায় তাঁর ডেঙ্গু (আইজিএম) পজিটিভ ধরা পড়ে। এরই মধ্যে তাঁর ব্লাড সুগার বেড়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান।