প্রচলিত মূল্যের চেয়ে লাখ টাকা বেশি ব্যয়ে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাসরীন ওয়াদুদের বিরুদ্ধে।
বিভাগের জন্য প্রজেক্টর, এসি ও প্রিন্টার ক্রয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রয়নীতির তোয়াক্কা না করার অভিযোগে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও বিভাগ সূত্র এবং অনিয়ম তদন্তে গঠিত কমিটির রিপোর্ট থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে বিভাগের সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটির সভায় একটি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, চারটি প্রিন্টার ও একটি এসি কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য বিভাগের কেমিক্যাল খাতের অব্যায়িত দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি অবলম্বনে রিকোয়েস্ট প্রাইস কোটেশনের (আরপিটি) মাধ্যমে খরচ করার কথা বলা হয়। পরবর্তীতে জিনিসপত্র কেনার পর অনিয়মের অভিযোগ উঠলে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানমকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম না মেনে অধ্যাপক নাসরীন তার পছন্দের ব্যক্তি বিভাগের স্টোর অফিসার মতিউর রহমানকে দিয়ে কোটেশন সংগ্রহ ও জিনিসপত্রগুলো কিনিয়েছেন। যেসব ব্র্যান্ডের জিনিসপত্র কেনা হয়েছে সেগুলোর শো-রুম থাকলেও নাম সর্বস্ব ডিলার দিয়ে চেয়ারম্যানের নির্দেশে মতিউর রহমান কিনেছেন বলে তদন্ত কমিটিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
কেনা জিনিসগুলোর মধ্যে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর (hitaci, model cpx3042wn) ৯০ হাজার টাকা, এসি (gree ১ টন) ৭৪ হাজার টাকা ও চারটি প্রিন্টার ৪০ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত কমিটির হিসাবে যার সর্বোচ্চ মূল্য যথাক্রমে ৩৮ হাজার, ৪৫ হাজার এবং ১২ হাজার টাকা। সে হিসাবে লাখ টাকা বেশি দিয়ে জিনিসপত্রগুলো কেনা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি বিভাগের স্টোর অফিসার মতিউর রহমানকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত ও বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
তদন্ত কমিটির রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ বলেন, এটা কোনো তদন্ত হয়নি। তদন্ত করার আগেই অনিয়ম লেখা হয়েছে। এটা একপাক্ষিক প্রতিবেদন। এই জিনিসপত্র তো আমি কিনিনি। রেজিস্ট্রার ভবনের লোক ছিল। আর টাকাও আমার হাত দিয়ে খরচ হয়নি।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম বলেন, আমরা তদন্ত করে রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি দেখতে হবে।
সৌজন্যে: বাংলানিউজ