গতকাল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও এতে তিনজন সাংবাদিকসহ ছাত্রদলের ২০ জনেরও বেশি নেতা-কর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় গণতন্ত্রের সুতিকাগার, মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও লালনের কেন্দ্র। এখানে ছাত্র-শিক্ষকসহ সকল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করবে, কার্যক্রম চালাবে এটাই প্রত্যাশিত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যও তাই। কিন্তু আমরা অত্যন্ত পরিতাপের সাথে লক্ষ করছি যে, জাতীয় রাজনীতিতে যেমন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে, তেমনি আমাদের প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করে একটি কর্তৃত্ববাদী পরিবেশ কায়েম করা হয়েছে। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমর্থক ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের একক আধিপত্য বজায় রাখার অশুভ মানসিকতা নিয়ে প্রতিনিয়তই ভিন্নমতের রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছাত্রদের উপর হামলা ও নির্যাতন চালাচ্ছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ছাত্রদল নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর গতকালের হামলা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেরই বহিঃপ্রকাশ। উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো একটি বিশেষ ছাত্র সংগঠনের নয়, বরং দল-মত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। তাই সকল শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের নিরাপত্তা, তাদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ করছি যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না। এমনকি একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক ধরনের পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের দ্বারা বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমাদের কাছে তা প্রতীয়মান হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটি পরিবেশ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাই আমরা গতকালের ছাত্রদল নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলায় জড়িত ও চিহ্নিত ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। একই সাথে বিশ্ববিদ্যলয়ে যেন সকল দল-মতের শিক্ষার্থী ও সংগঠন নির্বিঘ্নে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে, সে পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্যও কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।’