তথ্য গোপন করে অগ্রায়ন করা হয়েছে রাজধানীর ফরিদাবাদের বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের এমপিও আবেদন। মহিলা শিক্ষক কোটার তথ্য গোপন করে বিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. পল্লব হোসেন এমপিওর আবেদন অগ্রায়ন করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল। আবেদনের পর এ শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করতে তোড়জোড় শুরু করেছেন প্রধান শিক্ষক। দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মো. পল্লব হোসেন ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে তার এমপিওভুক্তির আবেদন অগ্রায়ন করেন প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল। প্রতিষ্ঠানে ৫ জন মহিলা শিক্ষক কর্মরত আছেন বলে আবেদনে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের মার্চের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের তালিকায় দেখা যায় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষককে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ধরেও বিদ্যালয়ে ১৪ জন শিক্ষক কর্মরত আছে। ইতোমধ্যে ২ জন মহিলা শিক্ষক অবসরে যাওয়ায় বর্তমানে মহিলা শিক্ষকের সংখ্যা ৩ জন। ফলে কোটা পূরণে বিদ্যালয়ে আরও ৩ জন মহিলা শিক্ষকের প্রয়োজন।
কিন্তু গত ১ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিতভাবে সহকারী শিক্ষক মো. পল্লব হোসেনকে এমপিও প্রদানের আবেদন করেন প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল। প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, পল্লব হোসেনের এমপিও আবেদন অনলাইনে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু চিঠিতে মহিলা শিক্ষকের সংখ্যা বা মহিলা কোটা পূরণ আছে কি-না তা উল্লেখ করা হয়নি।
২০১২ খ্রিষ্টাব্দের জারি করা এক আদেশে বলা হয়, জেলা সদর বা পৌর এলাকায় অবস্থিত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শিক্ষক পদের ৪০ শতাংশ ও অন্যান্য এলাকার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ পদে বাধ্যতামূলক মহিলা শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জানান, এ পরিপত্রের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের কোনো বিদ্যালয়ে মহিলা শিক্ষক কোটা পূরণ না হলে নতুন কোনো পুরুষ শিক্ষকের এমপিওর আবেদন বিবেচনা করা হবে না। এর ফলে এই বিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষকের এমপিওভুক্তির আবেদন ঝুলে আছে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে শুধুমাত্র মো. পল্লব হোসেনের এমপিওভুক্তির কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, সার্বিকভাবে চিন্তা করলে আমার প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশের বেশি শিক্ষক মহিলা। তবে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের হিসেবে এ সংখ্যা কম হতে পারে। তবে, যখন পল্লবের এমপিও আবেদন করা হয়, তখন মহিলা কোটা পূরণ ছিল। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল দৈনিক শিক্ষাকে আরও জানান, শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি রয়েছে। তাই হয়তো কেউ অভিযোগ করেছেন।