তিন দিন পর শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেই ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনার প্রতিবাদে টানা তিন দিনের আন্দোলনে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। দাবি পূরণের আশ্বাসে গত বৃহস্পতিবার আন্দোলন স্থগিত করেন ছাত্রী ও অভিভাবকরা।
বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী ছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষকেরা আলোচনায় বসেন। আলোচনা শেষে বিকেল পৌণে পাঁচটার দিকে ছাত্রীদের পক্ষ থেকে আন্দোলন বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ছাত্রীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা শুক্রবার থেকে পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষায় অংশ নেবে। রোববার থেকে ক্লাসেও ফিরবে।
পরীক্ষায় অংশ নিতে শুক্রবার সকালে ছাত্রীরা বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আসে। তাদের এগিয়ে দিতে অভিভাবকরাও আসেন। বেলা সাড়ে ১২টায় পরীক্ষা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ শান্ত ও স্বাভাবিক ছিলো ।
নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার হলে সন্তানকে নিয়ে আসলেও চরম ক্ষোভ ও বিক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। তারা বর্তমান কমিটির সকল সদস্যদের পদত্যাগের দাবি জানান।
অভিভাবকরা বলেন, আমরা অযোগ্য গভর্নিং বডির সদস্যদের থাকতে দেব না। তাদের কারণে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচণাকারী শিক্ষক ও কমিটির সদস্যরা। আমরা তাদের পদত্যাগ দাবি করছি।
গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ছাড়া সকল সদস্যই নির্বাচিত। তাদের পদত্যগের প্রস্তাবটি পরবর্তী সভায় তোলা হবে। সেই প্রস্তাবে কেউ রাজি থাকলে পদত্যাগ করতে পারেন।
গত সোমবার শান্তিনগরের বাসায় অরিত্রী আত্মহত্যা করে। অভিযোগ ওঠে, অরিত্রী ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, শাখাপ্রধান ও শ্রেণিশিক্ষক নির্দয় আচরণ করেন—এ কারণেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে সে আত্মহত্যা করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও এ কথা বলা হয়। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী।
অরিত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার মামলার আসামি অরিত্রীর শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আগের দিন বুধবার রাতে হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় অপর দুই আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আখতার। এই তিনজনের এমপিও (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) বন্ধ করা হয়েছে।