বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে বিতরণের জন্য ত্রাণের অনুদান হিসেবে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এক কোটি ছয় লাখ ৯১ হাজার ৪০৫ টাকা ৮০ পয়সা তুলেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বছরের অক্টোবরে এ টাকা তোলা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ১৫৭টি চেক, পে-অর্ডার ও ডিডির মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় এ টাকা। তার পর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়ার কথা ছিল মন্ত্রণালয়ের। তবে গত ১১ মাসেও এ অর্থ জমা দেওয়া হয়নি। আবার রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণও করা হয়নি। দীর্ঘদিনেও বিতরণ না করায় বেশিরভাগ চেকের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। সম্প্রতি বিষয়টি নজরে এলে সংশ্নিষ্টদের টনক নড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট শাখার কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনার কারণেই ত্রাণ বাবদ উত্তোলিত অর্থ যথাসময়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে জমা দেওয়া হয়নি। চেকগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণের পর গত ৫ আগস্ট তড়িঘড়ি করে চেক, পে-অর্ডার ও ডিডিগুলো হালনাগাদ করতে পুরনো চেকগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রতিকল্প) মো. শামসুল আলম স্বাক্ষরিত এক পত্রে মাউশি মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পে-অর্ডার/ ডিডি/ চেক হালনাগাদ করে 'প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল'-এর নামে ইস্যু করে ৮ আগস্টের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের হিসাব শাখায় পাঠাতে হবে।
বিষয়টি স্বীকার করে সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রতিকল্প) মো. শামসুল আলম ২০ আগস্ট বলেন, তারা চেকগুলো হালনাগাদ করে দিতে মাউশিকে বলেছেন। মাউশি থেকে হালনাগাদ চেক পেয়েছেন তারা। দু-একটি হয়তো বাকি আছে। কোরবানির ঈদের পর এ অর্থ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়ে দেবেন তারা। 'এত দিন দেরি হলো কেন'- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটি শিক্ষামন্ত্রীর হাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে দেওয়া হবে বলে তারা চেয়েছেন। এ জন্যই হয়তো একটু সময় লাগছে।' এর বেশি তিনি আর কিছু বলতে চাননি।
এ টাকার বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, 'মন্ত্রণালয় চেকগুলো নগদায়ন করে দিতে বলেছিল। আমরা পুরনো চেক ফেরত দিয়ে তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে হালনাগাদ করে এনে দিয়েছি।' তিনি বলেন, 'যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডিডি জমা দিয়েছিল, সেগুলো আর নগদায়ন করা লাগেনি। কারণ, এগুলোর কোনো নির্দিষ্ট তারিখ থাকে না। যে কোনো সময় ভাঙানো যায়।'
সৌজন্যে: সমকাল