কুমিল্লার দেবিদ্বরে মাদরাসা শিক্ষককে পেটানোর ঘটনায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের কঠোর শাস্তি দাবি ও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। দেবিদ্বার উপজেলার মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা আজিজুর রহমান একজন আলেম মানুষ। তাঁর গায়ে হাত তোলার অধিকার চেয়ারম্যানকে কে দিয়েছে? গোটা শিক্ষক সমাজ চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়। মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সংগঠনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা সাব্বির আহমেদ মোমতাজী দৈনিক শিক্ষাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ দাবি জানান।
আহত মাদরাসা শিক্ষক থানায় পিটিশন করেছেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অপরদিকে শিক্ষকের স্ত্রীও একটি পিটিশন করেছেন। আগমীকাল দেবিদ্বার থানার ওসি ঘটনাাস্থলে তদন্তে যাবেন। একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা যায়, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মাদরাসা শিক্ষক আজিজুর রহমানকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেছেন ওই উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার। গত বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকালে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই শিক্ষককে শুক্রবার চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শিক্ষকের স্ত্রীর করা মৌখিক অভিযোগে পেটানো হয়েছে বলে জানা যায়।
আহত শিক্ষক জানান, পারিবারিক কলহের কারণে চার সন্তানের জননী আমেনা আক্তার গত বৃহস্পতিবার সকালে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। পরে দুপুরের দিকে স্থানীয় গ্রামপুলিশ আবদুল মতিন ওই শিক্ষককে বাড়ি থেকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে যান। চেয়ারম্যানের বাড়িতে যাওয়ার সময় তার মেয়ে দাখিল শ্রেণির ছাত্রী আরিফাতুন নুর এবং চাচাতো ভাই আবদুস ছামাদকে সঙ্গে নেন।
চেয়ারম্যানের বাড়িতে যাওয়ার পর তার কোনো কথা না শুনেই চেয়ারম্যান লোহা ও কাঠের একটি লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি চেয়ারম্যানের পায়ে ধরে ক্ষমা চান এবং পরে সেখানে উপস্থিত তার মেয়ে চিৎকার করেও তাকে রক্ষা করতে পারেনি। এ সময় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামসহ অন্যান্য লোকজনও চেয়ারম্যানকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
এ বিষয়ে বড় ভাই ফজলুর রহমান জানান, কোনো কথা না শুনে বিচারের নামে চেয়ারম্যান পিটিয়ে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে আমার ভাইয়ের পুরো শরীর জখম করেছে। চিকিৎসা শেষে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মারধর করার বিষয়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘ওই শিক্ষকের স্ত্রীর বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি তাকে মারধর করেছি। তার স্ত্রী থানায় মামলা করলে তিনি গ্রেফতার হতেন। এলাকার সম্মান যেত। তাই আমি এভাবে কিছু মারধর করে বিচার করেছি।