মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তহীনতা১৬ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ বঞ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তহীনতায় উপবৃত্তি বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় ১৬ লাখ শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, সদ্যবিলুপ্ত সেকায়েপ প্রকল্পের অধীন ২৫০ উপজেলার প্রায় ১২ হাজার মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার এই বিপুল শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টিউশন ফি-ও আদায় করা হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরা।  

দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, সেকায়েপের অধীনস্থ প্রায় ১৬ লাখ শিক্ষার্থীর চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন কিস্তির উপবৃ্ত্তির টাকা দেয়া হয়নি। সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি একসেস এন্ড এনহ্যান্সমেন্ট প্রকল্পের (সেকায়েপ) মেয়াদ শেষ হয় গত ডিসেম্বরে। ঝরেপড়া রোধ, ছাত্রীদের বাল্যবিয়ে বন্ধ, প্রত্যন্ত অঞ্চলের আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে সরকার সেকায়েপ প্রকল্পের অধীনস্থ ২৫০টি উপজেলার প্রায় ১২ হাজার মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার ১৭ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি, বিনামূল্যের বই, পাবলিক পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা ও বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ দিয়ে আসছিল। এছাড়া প্রকল্পভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও শিক্ষার্থী সংখ্যার বিপরীতে কিছু টাকা দেয়া হতো, যার অধিকাংশই শিক্ষকরা পেতেন। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এই শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির কী হবে? তাদের টিউশন ফির কী হবে তা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এ অবস্থায় স্কুল ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় শুরু করেছে। সারা বছর তারা বিনাবেতনে পড়ে আসছে। কিন্তু হঠাৎ উপবৃত্তির টাকাও বন্ধ, আবার স্কুল থেকে টিউশন ফি চাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।   

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার দুটি প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক দৈনিক শিক্ষায় টেলিফোন করে অভিযোগ করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ছেলেমেয়েদের কাছে টিউশন ফি চাচ্ছে। ১ জুলাই থেকে অর্ধবাষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। টাকা না দিলে পরীক্ষা দিতে দিবে না।

জানতে চাইলে বিজয়নগরের মিরাসানি পলিটেকনিক একাডেমির প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা সোমবার (২ জুলাই) দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, উপরের কোনো নির্দেশনা পাইনি। উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তারাও কিছু বলতে পারেননি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছর, আজ পর্যন্ত নতুন প্রকল্পেরও কোনো খবর নেই। যদি নতুন প্রকল্প চালু না হয়, তবে আমরা টিউশন ফি নিতে বাধ্য হবো। নামে পলিটেকনিক হলেও সাধারণ ধারার শিক্ষাদানকারী এই প্রতিষ্ঠানে এক হাজার দুইশ’র বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, উপবৃত্তি প্রকল্পের ফলে দেশে আজ শিক্ষার হার এত বেশি। ঝরেপড়া রোধ, বাল্যবিয়ের হার কমানো, মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উপবৃত্তির বিকল্প নেই।

তারা বলেন, সেকায়েপ প্রকল্পভুক্ত ১৬ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি না পেলেও প্রকল্প কর্মকর্তা ঠিকই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদায়ন পেয়েছেন। অবিলম্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি সিদ্ধান্ত না দিলে টিউশন ফি্ আদায় নিয়ে জটিল অবস্থার উদ্ভব হতে পারে। কারণ, অভিভাবকরা জেনে আসছেন বিনাবেতনে পড়ানোর কথা। হঠাৎ করে বেতন আদায় করলে তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল মাদ্রাসায় পাঠানো বন্ধ করে দিতে পারেন।   


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.014118909835815