জালিয়াতি ও কারচুপির মাধ্যমে বয়স লুকিয়ে বগুড়ার সরকারি দুই বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৪৬০ আসনে ভর্তির জন্য প্রাথমিক ফল ঘোষণা করা হলেও উত্তীর্ণ অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের বিরুদ্ধে জন্ম সনদ জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে জালিয়াতির বিষয়টি টের পেয়ে ভর্তি কমিটি শিক্ষার্থীদের বয়স প্রমাণের সব নথি তলব করেছে। অন্যদিকে বয়স কারচুপির মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ফল বাতিল না হলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ভর্তির জন্য অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে বগুড়া জিলা স্কুল এবং বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ৪৩০টি আসনে ভর্তির জন্য গত নভেম্বরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, এর আগে যেসব পরীক্ষার্থী পর পর দুইবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে তারা তৃতীয়বার সংশ্লিষ্ট শ্রেণিতে আবেদন করতে পারবে না। এ রকম কোনো শিক্ষার্থী তথ্য গোপন করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হলেও পরে তাদের ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিল বলে গণ্য হবে।
জাল জন্ম নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে বয়স কারচুপি ও জালিয়াতির বিষয়টি জেনে ভর্তি কমিটি ফলাফলে সমানসংখ্যক অর্থাৎ ২৩০টি আসনেই অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ করে। সেই সঙ্গে প্রথম দফায় উত্তীর্ণদের বয়স প্রমাণের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ, মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র তলব করে। এতে বিপাকে পড়েন জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া অভিভাবকরা। ভর্তি বিজ্ঞপ্তির শর্ত মেনে তৃতীয় ও চতুর্থবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ফল বাতিল করা হলে আন্দোলনের হুমকি দেন তাঁরা।
অন্যদিকে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা ৪৬০ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা গতকাল মঙ্গলবার শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সমাবেশ করে তৃতীয় ও চতুর্থবারের মতো ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণদের ফল বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
আন্দোলনরত অভিভাবকদের আহ্বায়ক প্রভাষক জহুরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘বগুড়ার দুটি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সিংহভাগেরই জন্ম নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স কারচুপি করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বগুড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুসতাক হাবিব দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, জালিয়াতি ধরতে শিক্ষার্থীর জন্ম সনদসহ অভিভাবকের সব কাগজপত্র তলব করা হয়েছে।
ভর্তি কমিটির সভাপতি বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। নির্বাচনের পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’