দুর্নীতিবাজ কর্মচারীরা আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে দুর্নীতির দূর্গখ্যাত শিক্ষা ভবনে। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা অধিদপ্তরের পৃথক দুটি আদেশে ২২ জন অফিস সহকারি, উচ্চমান সহকারি, হিসাব রক্ষক ও প্রধান সহকারিকে বদলি করা হয়েছে। এদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ থেকে একজন উচ্চমান সহকারীকে অধিদপ্তরে আনা যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল বিস্তর। হাতেনাতে ধরা পড়ার পর মাত্র একবছর আগে তাকে শিক্ষা ভবন থেকে নারায়ণগঞ্জে বদলি করা হয়েছিল।
এছাড়া দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের কয়েকজন সম্প্রতি অধিদপ্তরের নেয়া পদোন্নতি কমিটির সভা স্থগিত করিয়েছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মাদরাসা শাখার উপপরিচালকের কাজ কি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এক অধিদপ্তরের অধীনে এমপিওভুক্ত আলিয়া মাদরাসার দেখভাল করার জন্য উপপরিচালক (বিশেষ) পদটি সৃষ্টি করা হয় কয়েক দশক আগে। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে মাদরাসার জন্য আলাদ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা হয়। শিক্ষা ভবন থেকে মাদরাসার সব কাগজপত্র হস্তান্তর শেষ ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে।’
তিনি বলেন, সারাদেশের সরকারি কলেজগুলোতে তীব্র শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও শিক্ষা অধিদপ্তরের শুধু মাদরাসা শাখায়ই অর্ধডজন শিক্ষক ও কর্মচারীকে বদলিভিত্তিক পদায়ন দিয়ে রাখা হয়েছে। শিক্ষকদের বেশিরভাগেরই কাজ সারাদিন ফেসবুকে এই মর্মে প্রচার চালানো যে, ‘এই শাখা থেকে যাবতীয় মনিটরিং হয় এবং এই শাখাকে কেউ যেন মাদরাসা শাখা বলতে না পারে, বলতে হবে বিশেষ শাখা। আর দিনে কমপাক্ষে দশবার এটাকে বিশেষ শাখা এবং এটা খুবই গুরুত্বপূরর্ণ মর্মে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে।’
অধিদপ্তরের একজন উপপরিচালকের বিরুদ্ধে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতির বিষয়ে আগাম তথ্য দিয়ে ঘুষের বাজার তৈরির অভিযোগ উঠেছে। বদলি ও পদোন্নতি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত হলেও সেগুলোর আগাম তথ্য দেয়ায় উপপরিচালকের কাজ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছেন বলে জানা যায়। সময় সময় ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বদলিচ্ছুকদের মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়। গত সপ্তাহে দুই দফায় প্রায় ২৫ জন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে ওই শাখার সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। ফেসবুকে কারো কারো বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথা লেখা হয়। আবার ধমক খেয়ে সেই স্টাটাস মুছেও দেয়া হয়।
কর্মাশিয়াল কলেজগুলো সাধারণ কলেজে আত্তীকৃত হলেও অধিদপ্তরে এখনও একজন সরকারি কলেজ শিক্ষকদে পদায়ন দিয়ে রাখা হয়েছে কথিত কর্মশিয়াল সেলের জন্য। অথচ ওই শিক্ষক যদি কোনও সরকারি কলেজ থাকতেন তাহলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতেন।
এছাড়া শিক্ষা অধিদপ্তরের আরেকজন উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। অফিস সময়ে ফুটপাতে প্রকাশ্যে ধূমপান করতে দেখা গেছে তাকে।
আরেকজন উপপরিচালকের বিরুদ্ধে চার-পাঁচটি ফৌজদারি ও প্রতারণার মামলা রয়েছে। ওইা মামলাগুলোতে হাজিরা দিতে বা শুনানিতে গেলেও ছুটি নেন না বলে জানা গেছে।