যশোর শিক্ষা বোর্ডকে দুর্নীতিমুক্ত করতে কাজ শুরু হয়েছে। এক্ষত্রে ‘জিরো টলারেন্স’নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে শিক্ষা বোর্ডটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ যাচাই-বাচাই শুরু হয়েছে। অভিযোগের প্রমাণ মিললেই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। যত বড় প্রভাবশালী কর্মকর্তা-কর্মচারী হোক না কেন অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শিক্ষা বোর্ডে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী গত পাঁচ থেকে সাত বছরের ব্যবধানে ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ হয়েছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে তারা রাতারাতি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা অফিসকে জিম্মি করে রেখেছেন। এসব অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি সিন্ডিকেট আছে। সব জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ শাখায় ওই সিন্ডিকেটের লোকজন বসানো। নিজেদের ইচ্ছামতো তারা অফিস পরিচালনা করেন। দীর্ঘ সময় পর এই সিন্ডিকেট ভাঙ্গার কাজে হাত দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই সূত্র ধরে চলতি বছরেরর ফ্রেরুয়ারি, মার্চ ও জুনে ওই সিন্ডিকেটে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর টেবিল পরিবর্তন করা হয়েছে। যাদের মধ্যে অনেকে একই শাখায় ২০ বছরের কাছাকাছি কর্মরত ছিলেন।
শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আল হাবিব বাপি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বোর্ডে দীর্ঘদিন ধরে একটি সিন্ডিকেট দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করত। শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল আলীম এ সিন্ডিকেটের আশ্রয়দাতা ছিলেন। এমন অনেকে আছেন যাদের ১০ বছরও চাকরির বয়স হয়নি, কিন্তু এরই মধ্যে গাড়ি, বাড়ি ও জমির মালিক হয়েছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান যোগদানের পর সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়েছেন। স্বচ্ছতার সাথে কাজ হচ্ছে। সবকিছু জবাবদিহিতার মধ্যে এসেছে। এসব দুর্নীতিবাজদের দ্রুত সাজা হোক আমরা এটা কামনা করি।
শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যশোর শিক্ষা বোর্ড সব সময় সেবার দিক থেকে এক নম্বরে রয়েছে। সব সেবা অনলাইনে বাস্তবায়ন করতে চেয়ারম্যান স্যার সুন্দর সুন্দর পদক্ষেপ নিয়েছেন। যোগ্যদের যথাস্থানে বসানো হচ্ছে। তবে, কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে আমরা চাই তার উপযুক্ত শাস্তি হোক। আমরা দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষা বোর্ড চাই।
এই সংগঠনের সহ-সম্পাদক মুজিবুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষা বোর্ডকে দুর্নীতিমুক্ত করে স্বচ্ছতা ও মডেল করার পক্ষে আমরা সব সময় আছি। বর্তমান চেয়ারম্যান স্যার যোগদান করে বেশকিছু ভালো পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমরা সব সময় ভালো কাজের সাথে আছি। দুর্নীতির সাথে কোনো আপোষ করব না।
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমীর হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে সঠিক প্রমাণ পাওয়া গেলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বোর্ডের স্বার্থে যে কোনো কঠোর অবস্থানে যেতে আমি সব সময় প্রস্তুত আছি।