করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সময়মতো ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) ও আয়কর বিবরণী জমা দিতে ব্যর্থ হলে এজন্য সুদ বা জরিমানা আরোপের বিধান বাতিল হচ্ছে। বুধবার অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইনে এ সংক্রান্ত পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আর আইনগত বাধা থাকছে না।
করোনা পরিস্থিতিতে সরকার জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতি মাসের আয় ব্যয়ের হিসাব পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট অফিসে জমা দিয়ে ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়। এটি ভ্যাট রিটার্ন নামে পরিচিত। এ কারণে করোনা পরিস্থিতিতেও গত ১৫ মে’র মধ্যে রিটার্ন জমা দেয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। একদিকে ঘরে থাকার জন্য সরকারি নির্দেশনা, অন্যদিকে রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানার খড়গ। কেননা রিটার্ন জমা দেয়ার জন্য বেশকিছু নথিপত্রও তৈরি করতে হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এর মধ্যেও গত শুক্রবার এনবিআর মাঠ পর্যায়ের ভ্যাট অফিস খোলা রেখেছে ভ্যাট রিটার্ন জমা নেয়ার জন্য। কেউ কেউ রিটার্ন জমাও দিয়েছেন।
তবে ইস্যুটি সমাধানের উপায় খুঁজছিল সরকার। যেহেতু সংসদ ছাড়া আইন পরিবর্তনের সুযোগ নেই, সেজন্য একমাত্র উপায় ছিল রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অধ্যাদেশ জারি। বুধবার এই অধ্যাদেশ জারি হলো। ফলে এখন এনবিআর আদেশ জারি করতে পারবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, দৈব-দুর্বিপাক বা যুদ্ধের কারণে জনস্বার্থে বোর্ড সরকারের পূর্বনুমোদনক্রমে আপদকালীন সময়ের জন্য সুদ ও জরিমানা আরোপ হতে অব্যাহতি প্রদান করে দাখিলপত্র পেশের সময় বাড়াতে পারবে।
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এনবিআর চাইলে এটি এখন আদেশ ভূতাপেক্ষ (আগের সময়ের জন্য) কার্যকর করতে পারবে। ফলে যারা মার্চ এপ্রিলের রিটার্ন দেয়নি, তাদেরও জরিমানা বা সুদ হবে না। এর ফলে ভ্যাট আদায় কিছুটা কমতে পারে।
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, আগেও কেউ আবেদন করলে জরিমানা বাতিলের সুযোগ কর্মকর্তাদের হাতে ছিল। তবে সুদ মওকুফ করা যেত না।