৩৯তম বিশেষ বিসিএসে যেসব চিকিত্সক স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের একটি অংশ আবার ৩৮তম বিসিএসে একই ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হতে যাচ্ছেন। ফলে একজন পরীক্ষার্থী একই ক্যাডারে দুইবার নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন। এতে করে সরকারি চাকরির কঠিন প্রতিযোগিতায় যোগ্যরা কাঙ্ক্ষিত চাকরি থেকে বঞ্চিত হবেন। এক ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্তরা যাতে দ্বিতীয়বার একই ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত না হন সেজন্য প্রধানমন্ত্রী এবং পিএসসির কাছে দাবি জানিয়েছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে আসন্ন ৩৮তম বিসিএসে কেউই যাতে এক পদে দ্বিতীয়বার নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত না হন—সেই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার জন্য সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। রোববার (৭ জুন) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন সাইদুর রহমান।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, যদিও পিএসসি বলছে, আপাতত তাদের কিছুই করার নেই। বিষয়টি ভেবে দেখবে কমিশন। ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি আগে প্রকাশিত হয়। পরে ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ৩৯তম বিসিএসে কেবল চিকিত্সকেরা অংশ নেন। এতে কোনো লিখিত পরীক্ষা ছিল না। তাই তুলনামূলকভাবে কম সময়েই এর নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হয়। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা নেওয়া সম্পন্ন হলেও এখনো ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়নি। তবে ৩৯তম বিসিএস থেকে প্রথম দফা প্রায় ৫ হাজার চিকিত্সক ও পরে সম্প্রতি অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ২ হাজার চিকিত্সক নিয়োগ দেওয়া হয়। এই বিসিএস থেকে নতুন করে আরো ২ হাজার চিকিত্সক নিয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে।
অন্য দিকে ৩৮তম সাধারণ বিসিএস। অনেক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হবেন এই বিসিএসের পরীক্ষার্থীরা। এতে অন্যান্য ক্যাডারের মতো চিকিত্সকেরাও অংশ নেন। ২২০টি চিকিত্সক পদের বিপরীতে ৩৮ বিসিএসে ৮৪৮ জনের ভাইভা দেওয়ার কথা থাকলেও পরে ৪৫০ জনের মতো প্রার্থী ভাইভা দেন। এদের মধ্যে আবার ২৫০ জন ৩৯তম বিসিএসে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।
৩৮তম বিসিএসের ফলাফলের জন্য অপেক্ষমাণ এক নারী চিকিত্সক জানিয়েছেন, যারা ৩৯তম বিসিএসে ক্যাডার হয়েছেন, আবার ৩৮তম বিসিএসে পরীক্ষা দিয়েছেন। ঐ প্রার্থীদের অনেকের ৩৮তম বিসিএসে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তারা চাকরি পেলে চাকরি না পাওয়া অনেকে বঞ্চিত হবেন। একই ব্যক্তি তো দুটি চাকরি করতে পারবেন না। তাই মানবিক অবস্থা বিবেচনা করে চাকরি না পাওয়া ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার আবেদন করেন ঐ প্রার্থী।
৩৯তম বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত এবং ৩৮তম বিসিএসের ফলাফলের অপেক্ষামাণ এক চিকিত্সক জানিয়েছেন, তারা মূলত সিনিওরিটির জন্যই ৩৮তম বিসিএসের ভাইভা পরীক্ষা দিয়েছেন। ঐ দাবি মানতে নারাজ শুধু ৩৮তম বিসিএসের ফল প্রত্যাশী চিকিত্সক প্রার্থীরা। তারা বলছেন, জেনারেল ক্যাডারদের ক্ষেত্রে সিনিওরিটির বিষয় থাকে। কিন্তু স্বাস্থ্য ক্যাডারে জয়েনিংয়ের ওপরই মূলত সিনিওরিটি নির্ভর করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, একটি সাধারণ এবং আরেকটি বিশেষ বিসিএস। আইনানুযায়ী এখানে পিএসসির করণীয় কী তা ভাবা হচ্ছে। মানবিক দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখা হবে।