নতুন তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন হার্ডকপিতে

রুম্মান তূর্য |

নতুন তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভুক্তিতে কয়েক স্তরে তথ্য যাচাই করা হবে। তাই, এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিও আবেদন অনলাইনে নয়, হার্ডকপি গ্রহণ করা হবে। যাচাই করে পাওয়া তথ্য সঠিক থাকলে তলিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করা হবে। এসব শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য যাচাইয়ে কমিটি করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, যখনই এমপিওভুক্ত করা হোক না কেন শিক্ষক কর্মচারীরা চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে  সরকারি কোষাগার থেকে এমপিও বাবদ বেতন পাবেন। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।    

মো. সোহরাব হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, নতুন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও জুলাই থেকে কার্যকর হবে। অক্টোবর মাসে ঘোষণা আসলেও শিক্ষকরা বকেয়া বেতন পাবেন। তিনি আরও জানান, তালিকা তৈরির সময় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আসা অনেক অসত্য তথ্য পেয়েছি। কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান প্রধান কিছু কিছু অসত্য তথ্য দিয়েছেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে, সিনিয়র সচিব আরও জানান, যদিও প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট অনেক কাগজই যাচাই করে দেখা হয়েছে। এখন এমপিওভুক্তির আগে শিক্ষক কর্মচারীদের সব কাগজও যাচাই করে দেখা হবে। শিক্ষক কর্মচারীদের তথ্য যাচাই করতে একটা কমিটি করা হবে। কমিটির করার জন্য খুব শিগগিরই মন্ত্রণালয় একটা সভা করবে। 

মো: সোহরাব হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, অনলাইনে আবেদন হলে ভুয়াদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে না। তাই তথ্য যাচাইয়ের স্বার্থে শিক্ষক কর্মচারীদের কাছ থেকে হার্ডকপিতে আবেদন নেয়া হবে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে বলেছে, অনুসন্ধানে ভুয়া একাডেমিক স্বীকৃতি ধরা পড়েছে ৪০টিরও বেশি। বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি। ছয় হাজারেরও বেশি আবেদনের এ ত্রুটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে, তালিকা ঘোষণার পরও যদি কোন অসত্য তথ্য ধরা পড়ে তাহলে বাদ পড়বে। 

দীর্ঘ ৯ বছর পর গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুরে গণভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন তিনি। এসময় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন। ২ হাজার ৭৩০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে পাঁচ দফা শর্ত আরোপ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।


  
শর্ত হিসেবে বলা হয়, শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, কারিগরি ও বিএম এমপিও নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী হবে। তবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়োগকালীন বিধি-বিধান সংশ্লিষ্ট পরিপত্র মোতাবেক প্রযোজ্য হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বিবেচিত হয়েছে তার মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠান নীতিমালা অনুযায়ী কাম্য যোগ্যতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে, সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও স্থগিত করা হবে। পরবর্তীতে কাম্য যোগ্যতা অর্জন করলে স্থগিত এমপিও অবমুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

শর্ত হিসেবে আরও বলা হয়, শিক্ষক নিবন্ধন প্রথা চালু হওয়ার আগে অর্থাৎ ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মার্চের আগে বিধি সম্মতভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির সুযোগ পাবেন। তবে, পরবর্তী সময়ে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জন্য অবশ্যই নিবন্ধন সনদ প্রযোজ্য হবে। যেসব তথ্যের আলোবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করা হয়েছে, পরবর্তীতে কোনো তথ্য ভুল বা অসত্য হলে তথ্য দেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তথ্যের সঠিকতা সাপেক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি আদেশ কার্যকর হবে।   

নতুন এমপিওভুক্তি তালিকায় নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩৯টি, ৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণির মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০৮টি, ৯ম-১০ম শ্রেণির মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮৮৭টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৬৮ টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৯৩টি এবং ডিগ্রি কলেজ ৫৬টি। আর নতুন এমপিওভুক্ত মাদরাসার মধ্যে দাখিল মাদরাসা সংখ্যা ৩৫৮টি, আলিম মাদরাসার সংখ্যা ১২৮টি, ফাযিল মাদরাসা ৪২টি ও কামিল মাদরাসার সংখ্যা ২৯টি। নতুন এমপিওভুক্ত কারিগরি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কৃষি ৬২টি, ভোকেশনাল স্বতন্ত্র ৪৮টি, ভোকেশনাল সংযুক্ত ১২৯টি, বিএম স্বতন্ত্র ১৭৫টি ও বিএম সংযুক্ত ১০৮টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003093957901001