নতুন বইয়ে বছর শুরুর অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নতুন বছর শুরু হতে এখনও মাসাধিককাল বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে আগামী শিক্ষাবর্ষের নতুন পাঠ্যবই দেশের অধিকাংশ জেলা ও উপজেলায় পাঠিয়ে দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগামী ১ জানুয়ারি সারাদেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে এসব বই তুলে দেয়া হবে। ওইদিন শিক্ষার্থীরা খালি হাতে স্কুলে আসবে এবং নতুন বই নিয়ে হাসতে হাসতে বাড়ি ফিরবে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) ভোরের কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতেবিদনটি লিখেছেন অভিজিৎ ভট্টাচার্য । 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জন্য বিনামূল্যের মোট ৩৬ কোটি ৩১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৩৮ কপি পাঠ্যবই ছাপানো হবে। গত ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩১ কোটি ৮২ লাখ বই ছাপা হওয়ার পর মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বাকি সময়ের মধ্যে অন্য বইগুলোও চলে যাবে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি সূত্র।

এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের বই নিয়ে সমস্যা নেই। এরই মধ্যে বেশিরভাগ বই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে গেছে। যে বইগুলো যাওয়ার বাকি রয়েছে সেগুলোও ডিসেম্বরের আগেই চলে যাবে বলে আশা করছি।

এনসিটিবির সূত্র বলছে, কিছু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই কর্মযজ্ঞ শুরুর পর থেকেই টেন্ডার জটিলতা, সময়মতো কাগজ ও আর্টপেপারের মান যাচাই ছাড়পত্র না দেয়া, নিম্নমানের কাগজে বই ছাপানোর অভিযোগ ছিল। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বই ছাপার কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি ছিল।

কিন্তু সব বাধাকে জয় করে এনসিটিবি নির্ধারিত সময়ের আগেই ছাপাখানাওয়ালাদের কাছ থেকে কাজ হাসিল করে নেয়। যথেষ্ট তদারকির মধ্য দিয়ে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষ করে এনে এখন তৃপ্তির ঢেঁকুড় তুলছে এনসিটিবি ও মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, এ বছর আমাদের প্রধান গুরুত্ব ছিল কাগজের গুণগত মানের ওপর। সেসব বিষয়ে আমরা কিছুটা বাধার সম্মুখীন হলেও শেষ হাসি হাসতে পেরেছি। এটাই বড় তৃপ্তি।

এনসিটিবি বলছে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের পাঠ্যবই এখন জেলা-উপজেলায় রয়েছে। এসব বইয়ের মান এবং সংখ্যা ঠিকঠাক রয়েছে কিনা তা দেখার জন্য ২৪ নভেম্বরের পর থেকে এনসিটিবি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে যাওয়া শুরু করবেন। এ জন্য ৩২টি কমিটি গঠন করা হবে। প্রতিটি কমিটি হবে ২ সদস্যের।

এই কমিটিগুলো জেলা ও উপজেলায় গিয়ে পাঠ্যবইয়ের মান যাচাই করবে। পাশাপাশি যে জেলায় যত বই যাওয়ার কথা তার পরিসংখ্যান ঠিক আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। যদি কোনো জেলা বা উপজেলায় পাঠ্যবইয়ের পরিসংখ্যান কিংবা গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তবে সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ওই কমিটির কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

কারণ পাঠ্যবইগুলো ছাপা হওয়ার পর মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানই ট্রাকযোগে জেলা ও উপজেলায় পাঠিয়েছেন। সেই বইগুলোকে সই করে বুঝে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা। এ জন্য এনসিটিবি কমিটির কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

জানতে চাইলে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সানশাইন মডেল হাইস্কুলের পরিচালক এম শামসুদ্দিন ভোরের কাগজকে বলেছেন, উপজেলার চাহিদা মাফিক সব পাঠ্যবই চলে এসেছে। সব বই চলে আসায় গুদামে রাখার জায়গা নেই।

এ জন্য স্কুলে স্কুলে পাঠ্যবই দিয়ে দেয়া হয়েছে। স্কুলের একটি সুরক্ষিত কক্ষে বইগুলোকে যত্ন করে রাখা হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি বছরের প্রথমদিনে উৎসবের মাধ্যমে বইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হবে।

সাতক্ষীরার আশাশুনি শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বাকীবিল্লাহ জানান, স্কুল পর্যায়ে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির সব বই এসে গেছে। ৮ম শ্রেণির ৭৪ হাজার ৩০০ এর মধ্যে ৪২ হাজার ৫০০ বই এসেছে, বাকি রয়েছে ৩১ হাজার ৮শ বই। নবম শ্রেণির ৮৬ হাজার ২শ বইয়ের মধ্যে এসেছে ৭৩ হাজার ৭০০ বই। এসে যাওয়া সব বই স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম কে ইমাম উদ্দিন বলেন, প্রাক-প্রাথমিকসহ সব শ্রেণির বই আমরা বুঝে পেয়েছি। ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি নাগাদ স্কুলগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী বই বিতরণ করা হবে।

ফেনী সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, পাঠ্যপুস্তক উৎসবের মাধ্যমে বছরের প্রথম দিনই বিদ্যালয় থেকে নতুন বই পেয়ে যাবে শিক্ষার্থীরা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061240196228027