উত্তাল সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির শান্তিহার কুনিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নদী ভাঙনে স্কুলটির একাংশ ইতোমধ্যেই বিলীন হয়ে গেছে। ভবনের ওয়ালসহ ফ্লোরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। দেবে গেছে একটি রুমের ফ্লোর। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে পাশ্ববর্তী শান্তিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বসে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা দিয়েছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের ভবনসহ সামান্য জমি ছাড়া স্কুলের ৬২ শতাংশ জমির সিংহভাগ সন্ধ্যা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাই, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কিত। এলাকাবাসীর আশঙ্কা যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে স্কুলের ভবনটি। ঘটতে পারে প্রাণহানীসহ মারাত্মক দুর্ঘটনা।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে পাকা ভবনটি নির্মিণ করা হয়। আগে বিদ্যালয়টিতে শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করলেও অব্যাহত নদী ভাঙনের ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বেশিরভাগ অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে স্কুলটিতে শিক্ষার্থী রয়েছে মাত্র ২৪ জন। ওই বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার প্রায় ৯০ ভাগ সন্ধ্যা নদীর গর্ভে হারিয়ে যাওয়ায় এ শিক্ষার্থীর সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানা যায়।
গত ১৯ এপ্রিল পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) মো. জাহিদ ফারুক স্বরূপকাঠির সন্ধ্যা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বিদ্যালয়টি রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাসুম দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এলাকা পরিদর্শন করে ম্যাপ তৈরি করেন। কিন্তু সন্ধ্যা নদীর ভাঙন থেকে স্কুলটি রক্ষায় আজ পর্যন্ত আর কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
এ বিষয়ে স্বরূপকাঠির ইউএনও সরকার আবদুল্লা আল মামুন বাবু দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহ আলম দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, নদী ভাঙন থেকে স্কুলটি রক্ষায় প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে ব্যয়ের হিসাব তৈরি করে টেন্ডারের ব্যবস্থা করা হবে।